আলাপন সাহা: ইডেনে (Eden Gardens) কেকেআরের ঢাউস টিম বাসটা ঢুকেছে মিনিট পাঁচেক হয়েছে। মাঠে এসে সোজা তিনতলার প্রেস কনফারেন্স রুমে চলে এলেন লকি ফার্গুসন। শেষ দুটো ম্যাচে দুর্ধর্ষ জয়। স্বাভাবিকভাবে পুরো টিম ভীষণ খোশমেজাজে। লকিকেও প্রচণ্ড হাসি-খুশি দেখাচ্ছিল। তবে ফুরফুরে আবহে নাইট শিবিরে যেটুকু দুশ্চিন্তার মেঘ, সেটা ওই আন্দ্রে রাসেল (Andre Russell) নিয়ে। প্রথম তিনটে ম্যাচেই ‘শান্ত’ থেকেছে ড্রে রাসের ব্যাট। পরিচিত সেই বিধ্বংসী মেজাজে এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যদিও লকি এসে বলে গেলেন, টিমের বিশ্বাস রাসেল দ্রুত ফর্মে ফিরবে।
এদিনের প্র্যাকটিসে রাসেলকে যে মূর্তিতে পাওয়া গেল, তাতে মনে হতে পারে, শুক্রবারের ইডেনে কিছু একটা ঘটতে পারে। নেটে সবার শুরুতে ব্যাট করতে গেলেন রাসেল। প্রথম সেন্টার উইকেটের পাশে নেটে। তারপর বেশ কয়েকটা নেট ঘুরে ঘুরে ব্যাটিং-পর্ব চলল। সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর শেষের দিকে আরও দফা ব্যাটিং সেরে গেলেন। এতো গেল ব্যাটার রাসেল। আরও একটা ব্যাপার কেকেআর (KKR) শিবিরকে ভালরকম আশ্বস্ত করতে পারে–বোলার রাসেল। তিনটে ম্যাচে এখনও পর্যন্ত রাসেল বোলিং করেননি। এমনকী প্র্যাকটিসেও তাঁকে খুব একটা বোলিং করতে দেখা যাচ্ছিল না। যা নিয়ে কানাঘুষো চলছিল, ক্যারিবিয়ান তারকা নাকি পুরো ফিট নন। তবে এদিন পুরো দমে বোলিং করলেন রাসেল। যেভাবে বেশ কয়েকটা নেট ঘুরে ঘুরে ব্যাটিং করছিলেন, সেভাবেই দুটো-তিনটে নেটে দীর্ঘক্ষণ বোলিং করে গেলেন রাসেল। এরপর থেকেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে– তাহলে কি হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচে বোলিং করবেন তিনি?
রাসেলের বোলিং করার অর্থ বিকল্প অনেক বেড়ে যাবে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে, সেটা সবার জানা। সেক্ষেত্রে বিদেশি পেসারের জায়গায় বাড়তি ব্যাটার খেলানোর একটা বিকল্প পেয়ে যাবেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। যদিও কেকেআর কোচ শুক্রবার ঘরের মাঠে টিমে কোনওরকম বদলাতে চাইছেন না বলে শোনা গেল। বরং তিনি উইনিং কম্বিনেশন রেখে দেওয়ার বিশ্বাসী। একইসঙ্গে এটাও বলা হচ্ছে, রাসেল যদি পুরো ওভার বোলিং করতে না পারেন, তাহলে সমস্যা হয়ে যেতে পারে। তাই এখনই বিদেশি পেসার না খেলানোর পরিকল্পনা ঝুঁকির হয়ে যেতে পারে। যা শোনা যাচ্ছে, তাতে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে যে টিম খেলেছিল, ইডেনে সেটাই হয়তো থাকছে।
এতক্ষণ একটা কথা বলাই হয়নি। বৃহস্পতিবারের ইডেন সাক্ষী হয়ে থাকল এমন এক ঘটনার, আইপিএলের (IPL) দুনিয়া মনে হয় না এর আগে তা দেখেছে বলে। কেকেআর কোচ পণ্ডিতমশাইয়ের কঠোর অনুশাসনের কথা ভারতীয় ক্রিকেট মহলের সবার জানা। কিন্তু এদিন যেভাবে টিমের প্রত্যেককে দিয়ে মাঠ পরিষ্কার করালেন, সেটা অনন্য নজির হয়ে থাকল। প্র্যাকটিসের মাঝে ক্রিকেটাররা জল খেয়ে বোতলগুলো এদিক-ওদিক ছিটিয়ে রেখেছিলেন। চন্দ্রকান্ত ক্রিকেটারদের গিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মাঠ আর ড্রেসিংরুম পরিষ্কার রাখাটা ক্রিকেটারদের দায়িত্ব। মাঠকর্মীদের নয়। নীতিশ রানা, সুহাস শর্মারা কোচের নির্দেশ মতো প্র্যাকটিস শেষে পুরো মাঠে পরিষ্কার করে গেলেন। মাঠের যুদ্ধে শুক্রবার কেকেআর কী করবে জানা নেই, তবে মাঠের বাইরে যে গোটা শহরের মন জিতল টিম কেকেআর সেটা লিখে দেওয়াই যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.