রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: সারাদিন কিছু খাননি? খিদে পেলে শহরের বুকে রাস্তার ধারে এই হোটেলে ঢুকতেই পারেন। কিন্তু আপনার পকেটে যদি কম পয়সা থাকে বা নাই থাকে তাহলেও কুছ পরোয়া নেহি। এই হোটেলে কব্জি ডুবিয়েই ভূরিভোজ চলতে পারে। কিন্তু একটা শর্ত আছে। আপনাকে ভারতীয় ক্রিকেটার তথা বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ভক্ত হতে হবে। তাহলেই আপনার সাতখুন মাপ। হোটেল মালিক খাবারের দামের উপর ছাড় দিতে প্রস্তুত। এমনকী, পয়সা না থাকলেও সমস্যা নেই। তামাম আলিপুরদুয়ারবাসীর কাছে এই হোটেল ‘ধোনির হোটেল’ বলেই পরিচিত। আর ধোনি অন্তপ্রাণ হোটেল মালিক শম্ভু বসু (৩০) তো ক্রিকেট প্রেমের জন্যই এলাকায় রীতিমতো জনপ্রিয়।
আদ্যপান্ত ধোনিভক্ত শম্ভু আলিপুরদুয়ারের পূর্ব শান্তিনগরের বাসিন্দা। নিজের হোটেলটির নামকরণও করেছেন এম এস ধোনির নামেই। হোটেল মালিকের বক্তব্য, ‘আমি গরিব ঘরের ছেলে। আমার খুব বেশি সামর্থ্য নেই। কিন্তু কেউ ধোনির ভক্ত হলে আমার মন খুশিতে ভরে ওঠে। তাঁর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করি, কোলাকুলি করি। আমার হোটেলের নামও রেখেছি এম এস ধোনিরই নামে। তাই কেউ নিজেকে ধোনির ফ্যান বলে পরিচয় দিলে তাঁর কাছ থেকে আর টাকা চাইতে পারি না। অনেকের কাছে হোটেলের যা বিল হয় তার থেকে কম নিই। ধোনি ভক্তদের জন্য এই হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করলে পয়সা কোনও ব্যাপার হয় না। ” স্রেফ ধোনি গুণগান করাই নয়, ভারতের ম্যাচ থাকলে হোটেল সামনে রাস্তা জাতীয় পতাকা লাগান শম্ভু। কোহলিরা জিতলে পোড়ান বাজিও। ২০১১ সালে অধিনায়ক হিসাবে ধোনির হাতে যেদিন বিশ্বকাপ উঠেছিল, সে’দিন হোটেল বন্ধ ছিল। হোটেলের বাইরে বড়পর্দা লাগিয়ে সকলেই সঙ্গে ফাইনাল ম্যাচ দেখেছিলেন শম্ভুও। এবারের বিশ্বকাপেও ক্রিকেট পাগল ওই যুবকের সেই নিয়মে ভাটা পড়েনি। রবিবার ভারত-অস্ট্রেলিয়ার খেলার দিনও ভাঙাপুল এলাকা জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজিয়ে তোলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।
আলিপুরদুয়ারের এই ‘ধোনির হোটেলে’র নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া করেন রাজেশ বর্মন। তিনি বলেন, , ‘এই হোটেল ইতিমধ্যেই অসম, বিহার-সহ বিভিন্ন জায়গার ধোনি ভক্তদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। ক্রিকেট খেলা নিয়ে এই উন্মাদনা খুব ভাল লাগে। বর্তমান সময়ে ছেলেমেয়েরা ধেলাধুলো থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে খেলা নিয়ে সেই উন্মাদনাও। তার মাঝে শম্ভু সত্যি ব্যাতিক্রমী চরিত্র।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.