সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই ইতিহাসের ভাণ্ডার। আর সেই ভাণ্ডারে কী নেই! ভাল-মন্দ-রাগ-অভিমান-উচ্ছ্বাস-হতাশার নানা মুহূর্ত দিয়ে সাজানো বিশ্বকাপের ইতিহাস। প্রতিবারই কিছু না কিছু ঘটনা ঘটে যা চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যায় ফুটবলপ্রেমীদের মনে। বিশেষ করে স্মৃতিতে থেকে যায় বিতর্কিত মুহূর্তগুলি। দোরগোড়ায় রাশিয়া বিশ্বকাপ। চলুন তার আগে একবার ফিরে দেখা যাক মাঠের সেই সব মুহূর্ত, যা নিয়ে আজও আলোচনা চলছে।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ:
হ্যান্ড অফ গড। এটুকু বললেই বাকিটা বোধগম্য। বিশ্বকাপের ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূর্তের অন্যতম। কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এরিয়াল বল হাত দিয়ে জালে জড়িয়ে ছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা। সেই দৃশ্য ইংল্যান্ডের গোলকিপার পিটার শিল্টন-সহ হাঁ করে দেখেছিল গোটা বিশ্ব। পরবর্তীকালে নিজেই গোলের নাম দিয়েছিলেন ‘হ্যান্ড অফ গড’। যদিও কিছুদিন আগে মারাদোনা নিজেই মেনে নিয়েছেন এমন ঘটনা এই যুগে ঘটালে গ্রেপ্তার হয়ে যেতেন।
২০০৬ বিশ্বকাপ:
ফ্রান্স বনাম ইতালির সেই সেমিফাইনালের দৃশ্য আট থেকে আশি, সকলেরই জানা। দ্বিতীয়ার্ধের এক্সট্রা টাইমে বচসায় জড়ান জিনেদিন জিদান ও ইতালির মাতেরাজ্জি। মেজাজ হারিয়ে মাতেরাজ্জিকে মাথা দিয়ে ঢুঁসো মারেন জিদান। সঙ্গে সঙ্গে রেফারির লাল কার্ডে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। সেটাই ছিল জিদানের শেষ বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট থেকে এভাবে বিদায় নেওয়ার পর জিদান জানিয়েছিলেন, মাতেরাজ্জি তাঁর পরিবারের সদস্যের সম্পর্ক খারাপ কথা বলাতেই মেজাজ হারিয়েছিলেন তিনি।
২০১৪ বিশ্বকাপ:
গত বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত দৃশ্যের অন্যতম। ম্যাচের মাঝেই ইতালির চিয়েলিনির ঘাড়ে কামড় বসান উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। যদিও সে যাত্রায় লাল কার্ড দেখতে হয়নি তাঁকে। তবে ফিফা পরে তদন্ত করে পরবর্তী চার মাস নির্বাসিত করেছিল সুয়ারেজকে। এই কাণ্ডের পর দেশের জার্সি গায়ে ন’টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলতে পারেননি বার্সা স্ট্রাইকার।
২০০২ বিশ্বকাপ:
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্রাজিলীয় প্লেমেকার রিভাল্ডোর অসাধারণ অভিনয়ের সাক্ষী থেকেছিল গোটা বিশ্ব। কর্নার নিতে যাওয়ার আগে তুর্কি ফুটবলার হাকান আনসাল বল ছুঁড়ে দেন রিভাল্ডোর দিকে। যা তাঁর হাঁটুতে এসে লাগে। কিন্তু মুখ ধরে মাটিতে বসে পড়তে দেখা যায় রিভাল্ডোকে। এরপর চলে যন্ত্রণায় কাতর হওয়ার অভিনয়। বিষয়টি আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায় যখন এই ঘটনার জন্য রেফারি আনসালকে লাল কার্ড দেখান। সেই ম্যাচটি জিতেছিল ব্রাজিলই। পেনাল্টি থেকে গোলও করেছিলেন রিভাল্ডো। তবে পরবর্তীকালে তাঁর কীর্তি সামনে আসে এবং তাঁর মোটা অঙ্কের জরিমানা হয়। যদিও নির্বাসনের কবলে পড়তে হয়নি তাঁকে।
১৯৯০ বিশ্বকাপ:
ইতালিতে ছিল সেবারের বিশ্বকাপ। কার্ড সমস্যায় কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে না পারার রাগে জার্মানির স্ট্রাইকার রুডি ফোলারের মাথায় থুতু ছিটিয়ে দিয়েছিলেন ডাচ তারকা ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ড। এরপর দুজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তাতে কার্ড দেখেন জার্মান তারকাও। একটি ফ্রি-কিকের পর সেই ঝামেলা আরও বাড়ে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষমেশ দুজনকেই লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে পাঠান রেফারি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.