নিজস্ব সংবাদদদাতা, ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে ধুন্ধুমার ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। হৈ-হট্টগোল থামাতে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। পালটা দেয় দর্শকরাও। পুলিশকে লক্ষ্য করে তাঁরা ইট-পাটকেল ছোড়ে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, ম্যাচের টিকিট নিয়ে এই বড় ঝামেলার সূত্রপাত। ঘটনার সময় এক নম্বর গেট সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারের ভিতরে কেউ ছিল না। কিন্তু কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছিলেন হাজারো মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই জানতেন না এই বুথে টিকিট দেওয়া হবে। পড়ে জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দর্শকরা।
সূত্রের খবর, গতকাল রবিবারও টিকিট না পাওয়ায় উত্তপ্ত ছিল স্টেডিয়ামের আশপাশ। অভিযোগ, তখনও পর্যন্ত টিকেট নিয়ে কোনও তথ্যই বিসিবি জানায়নি। ২২ ঘণ্টারও কম সময় থাকতে ছাড়া হয় টিকেট। অনলাইনে বিসিবির নতুন ওয়েবসাইট ও মধুমতি ব্যাঙ্কের নির্ধারিত ৭টি শাখায় বিক্রি করা হয় প্রথম দিনের দুই ম্যাচের টিকিট। এদিন বিকেল ৪টেয় টিকেট দেওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দুঘণ্টা পর টিকেট কাটতে পারেন দর্শকরা। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকার পর সন্ধ্যায় মধুমতি ব্যাঙ্কের মিরপুর শাখায় ভাঙচুর করেন টিকেটপ্রত্যাশী দর্শকরা। সোমবারও এনিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। খেলা ছিল ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহীর মধ্যে।
আজ উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে স্টেডিয়ামের মেন গেট দিয়ে মাঠে ঢুকতে পারেনি রাজশাহী দল। তখন উত্তেজিত দর্শকরা লোহার বিশাল গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। বিক্ষুদ্ধ দর্শকদের ক্ষোভের মুখে বাস ঘুরিয়ে ৪ নম্বর মাঠ দিয়ে ঢুকতে হয় দলটিকে। একই দশা হয় খুলনা টাইগার্সের হয়ে অনুশীলনে আসা মেহেদি হাসান মিরাজেরও। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে শুরু করলে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিসিবির স্বেচ্ছাসেবীরা লাঠিচার্জ শুরু করে। পালটা ইট ছুড়তে শুরু করে দর্শকরা।
এখানেই থামেনি ঝামেলা। দুর্বার রাজশাহীর টিম বাস আসতেই সেদিকে রীতিমতো হামলে পড়েন দর্শকরা। বিকল্প পথে বাস নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হলে সেদিকেও ধাওয়া করেন তাঁরা। এই অবস্থার মধ্যে পরিবার নিয়ে খেলা দেখতে এসে কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ধানমন্ডির রাজিবুল হকের মনে। আগের দিনই অনলাইনে টিকেট করে রেখেছিলেন তিনি। তবে ব্যাঙ্কের কোনও শাখা থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না মধ্যবয়সী ওই ব্যক্তি। নিশ্চয়তা পেয়ে মাঠে প্রবেশের লাইনে দাঁড়ান তিনি। খেলা শুরু হলে বেলা সাড়ে ১২টার পর পরিস্থিতি শান্ত হলে দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় সবকটি গেট। অনলাইন টিকেটের প্রিন্ট কপি কিংবা মোবাইলে সফট কপি দেখিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে পারেন দর্শকরা। তবে মাঠের বাইরে যত মানুষের ভিড় ছিল, ভিতরের ছবিটা ছিল উলটো। ম্যাচের প্রথম বল হওয়ার পর্যন্ত খুব একটা ভরেনি গ্যালারি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.