সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাত পোহালেই এজবাস্টনে ভারত-পাক মহারণ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গ্রুপ পর্যায়ের প্রথম ম্যাচেই বিপক্ষে চির-প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। টেনশন রয়েছে, কিন্তু কোথাও যেন কোহলি-যুবরাজদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ছাপ স্পষ্ট। ম্যাচের আগে শুক্রবার ছিল দীনেশ কার্তিকের জন্মদিন। আর সেখানেই হই-হুল্লোড়ে মেতে উঠলেন কোচ থেকে খেলোয়াড়রা। কাটা হল কেকও। উপস্থিত ছিলেন সাপোর্ট স্টাফ থেকে শুরু করে প্রত্যেক সদস্যই। বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে টুইটারে সেই ভিডিওটি পোস্টও করা হয়। অন্যদিকে, পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও কিন্তু ভিতরে ভিতরে ভারতকে হারানোর জন্য তৈরি হচ্ছেন। ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী’-সরফরাজ আহমেদ, ওয়াহাব রিয়াজ-সহ গোটা পাকিস্তান টিমের মূলমন্ত্র এখন এটাই। তবে গোটা ম্যাচেই রয়েছে বৃষ্টির ভ্রূকুটি। আবহাওয়া দপ্তরের খবর অনুযায়ী, বৃষ্টি থাবা বসাতেই পারে ম্যাচে।
যদি তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই সমর্থকদের। বার্মিংহামে সময় যত এগিয়ে আসছে ততই দু’দেশের সমর্থকদের মধ্যেও উত্তেজনা বাড়ছে। গত কয়েকদিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ইন্ডিয়ার নতুন জার্সিতে ফ্যানেদের উত্তেজনা ছিল দেখার মতো৷ আর কে না জানে, রবিবার সকাল থেকে সেই টানটান উত্তেজনার পারদ বেড়ে যাবে বেশ কয়েকগুন৷ ম্যাচের আগের দিনের ছবিও কিন্তু কম কিছু নয়৷ কাছ থেকে বিরাট, যুবি, জাদেজাদের দেখার জন্য ভারতীয় ফ্যানদের ভিড় স্টেডিয়ামে৷ নিরাপত্তারক্ষীরা রীতিমতো নাজেহাল হচ্ছিলেন সবাইকে সামলাতে৷ অর্থাত্ সব মিলিয়ে কলকাতা হোক বা লন্ডন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সেই চেনা ছবি ধরা পড়ল বারবার৷ হঠাত্ কেন কলকাতার কথা আসল? আসলে দুই দেশের শেষ সাক্ষাত্ তো ইডেনেই হয়েছে৷ বিশ্বকাপের মঞ্চে৷ তারপর এই লন্ডনের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি৷ সেবার হেরেছিল পাকিস্তান৷ এবার? প্রাক্তনরা যা বলছেন তাতে ছবি বদলের সম্ভাবনা কম৷ অর্থাত্ এবারও ভারতই জিতবে, বলে দিচ্ছেন তাঁরা৷ এমনকী পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও এগিয়ে রাখছেন ভারতকে।যেমন শাহিদ আফ্রিদি৷ তিনি বলছিলেন, “পাকিস্তান আমার দেশ৷ তাই যার বিরুদ্ধেই পাকিস্তান নামুক না কেন, চাইব আমরাই জিতি৷ আর লড়াইটা ভারতের বিরুদ্ধে যখন, বেশি করে নিজের দেশের জয় চাইব৷ তবে ভারতের যা টিম, তাতে পাকিস্তান জিততে পারবে না৷ কারণ কোহলির টিমের ব্যাটিং, বোলিং, দু’টোই দারুণ শক্তিশালী৷”
আর এক প্রাক্তন আমির সোহেল আবার মনে করছেন, ভারত-পাকিস্তান দুই দলেরই জয়ের সম্ভাবনা পঞ্চাশ-পঞ্চাশ৷ কেন? প্রাক্তন পাক ক্রিকেটারের জবাব, “ম্যাচের আগে থেকে ভারতকে ফেভরিট বলা হচ্ছে৷ কোহলির টিম সত্যি দুর্দান্ত খেলছে৷ কেই তো পাকিস্তানকে নম্বরই দিতে চাইছে না৷ এটা কিন্তু পাক ক্রিকেটারদের জন্য স্বস্তির হতে পারে৷ ওরা কোনও চাপ নিয়ে নামবে না৷ কারণ কিছু হারানোর নেই৷” না থেমে সোহেল বলে চলেন, “এখন ক্রিকেটারদের সারা বছর চাপ নিয়ে পারফর্ম করতে হয়৷ পাকিস্তানকে জিততে হলে সেরা ক্রিকেটটা খেলতে হবে৷”
এদিকে, আর মাত্র তেরোটি উইকেট নিতে পারলেই একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বের সবথেকে দ্রুততম একশো উইকেট শিকারের কৃতিত্ব অর্জন করবেন মহম্মদ সামি৷ এই মুহূর্তে তিনি ৪৭টি একদিনের ম্যাচে ৮৭টি উইকেট দখল করেছেন৷ বিশ্বরেকর্ড রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্কের৷ তিনি ৫২টি ম্যাচে একশো উইকেট দখল করেছিলেন৷ একদিনের ক্রিকেটে দ্রুততম একশো উইকেট দখলের তালিকায় এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সাকলিন মুস্তাক৷ সামি রেকর্ড গড়তে হাতে পাবেন চারটি ম্যাচ৷ এই চার ম্যাচের মধ্যে ১৩টি উইকেট দখল করতে পারলেই অনন্য নজির গড়বেন বাংলার পেসার৷
তবে রবিবারের মহারণে বৃষ্টির ভ্রূকুটি চিন্তায় রাখছে ক্রিকেট প্রেমীদের। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী সারাদিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ ম্যাচে বৃষ্টি ব্যাঘাত ঘটাতেই পারে। তবে আশার কথা হল এজবাস্টনের জলনিকাশি ব্যবস্থা খুবই ভাল। তাই অল্প বৃষ্টি হলেও পুরো খেলাই উপভোগ করতে পারবেন দু’দলের সমর্থকরা। এখন দেখার শেষপর্যন্ত কে শেষ হাসি হাসে? ভারত না পাকিস্তান? নাকি দুর্দান্ত ম্যাচ দেখার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবেন বরুণদেব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.