সংবাদ প্রতিদিন, ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হচ্ছে যুরগেন ক্লপের লিভারপুল। ফুটবল বিশ্ব প্রহর গুণছে দুই আক্রমণাত্মক দলের লড়াই দেখার জন্য, সেই সঙ্গে সালাহ বনাম রোনাল্ডো দ্বৈরথে কে কাকে টেক্কা দেন তাও গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের আলোচনার বিষয়। বড় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল মানেই বোরিং ম্যাচ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মনে করা হয়, দাবার মতো সারাক্ষণ স্ট্র্যাটেজির খেলা হবে। কিন্তু লিভারপুল বনাম রিয়াল মাদ্রিদ ঠিক উল্টো হবে, এমনটাই আশা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কারণ এমন দুটো দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে যাদের খেলার ইউএসপি-ই আক্রমণ। দুটো দলই এ বার নিজের দেশের ঘরোয়া লিগে ভাল করতে পারেনি। কিন্তু প্রসঙ্গ যখন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তখন আক্রমণকে হাতিয়ার করেই ফাইনালে উঠেছে দুটো ক্লাব।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মানেই অন্যরূপে রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরোয়া লিগে যতই খারাপ খেলুক নক-আউট টু্র্নামেন্ট যেন তাঁতিয়ে দেয় জিদানের ফুটবলারদের। আর সেজন্যই হয়ত টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে রিয়াল। অন্য কোনও দল, পরপর দুবারও জিততে পারেনি ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মান। রিয়ালের সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গা আক্রমণ এবং মাঝমাঠ। লুকা মডরিচ—টনি ক্রুজের মতো শিল্পীর যুগলবন্দি আছে। যারা সুন্দর সমস্ত মুভ তৈরি করতে পারে। আবার ক্যাসেমিরোর মতো ধ্বংসাত্মক ফুটবলারও আছে সেখানে। যার কাজ বিপক্ষ আক্রমণ থামানো। আর আক্রমণে হয়তো ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর নামটাই যথেষ্ট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে রোখাটাই ক্লপের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
রিয়ালের যদি রোনাল্ডো থাকেন তাহলে পিছিয়ে নেই লিভারপুলও। সবাইকে চমকে দিয়ে এবছরে সবচেয়ে বেশি গোল করে ফেলেছেন মহম্মদ সালাহ। গতি আর স্কিলের অনবদ্য মেলবন্ধনে ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছেন সালাহ। লিভারপুলের স্টার স্ট্রাইকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ খোদ রোনাল্ডোও। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসির সঙ্গে ইজিপশিয়ান তারকার তুলনা করেছেন সিআর সেভেন। সালাহ অবশ্য বিনয়ের সঙ্গে খারিজ করে দিয়েছেন রোনাল্ডোর মত। এখনও নিজের থেকে মেসিকে অনেকটাই এগিয়ে রাখছেন প্রাক্তন চেলসি তারকা। সালাহ একা নন, আক্রমণ ভাগের আরও দুই তারকা সাদিও মানে এবং রবার্তো ফারমিনো কিন্তু নীরবে নিজের কাজ করছেন। এই তিনজনই অত্যন্ত গতিতে বল নিয়ে দৌঁড়তে পারেন, এদের আটকানোটাই আসল চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে জিনেদিন জিদানের। ক্লপের আশা, গ্রুপ পর্বের মত ফাইনালেও নিজেদের সেরা ফর্মে থাকুন সালাহ, মানে, ফারমিনোরা। আর সেজন্যেই হয়ত ফাইনালের আগে রোজা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সালাহ, সাদিও মানের মত ফুটবলাররা।
তরতাজা, তরুণ ফুটবলার থাকলেও লিভারপুলের চিন্তার কারণ হতে পারে অভিজ্ঞতা। কারণ রেডসদের বর্তমান দলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই। অন্যদিকে, রিয়ালের মূল ভরসা সেই অভিজ্ঞতাই। গত দুবারের চ্যাম্পিয়ন তারাই। রোনাল্ডো, ব়্যামোস, মডরিচরা দীর্ঘদিন ধরে খেলছেন সর্বোচ্চ স্তরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই অভিজ্ঞতাই লিভারপুলের থেকে কিছুটা এগিয়ে রাখবে রিয়ালকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.