স্টাফ রিপোর্টার: প্র্যাকটিস শেষ করে এক এক করে মাঠ ছাড়ছেন মোরান্তা, জোসেবা, শিল্টন পালরা। প্রত্যেকের চোখে-মুখে বিস্ময়। জিজ্ঞাসাও। খেলা আদৌ হবে তো? ২৪ ঘণ্টা বাদে পিয়ারলেসের সঙ্গে খেলা। লিগ অভিযান শুরু করার কথা মোহনবাগানের। অথচ শতবর্ষপ্রাচীন ক্লাবের কর্তা থেকে ফুটবলার, কেউই জানেন না কাল মোহনবাগান-পিয়ারলেস ম্যাচ হবে কিনা।
আপাতত যা খবর, মোহনবাগান-পিয়ারলেস ম্যাচ স্থগিত হওয়ার পথে। আইএফএ সচিব জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, মোহনবাগানের খেলা হওয়া সম্ভব নয়। যেহেতু পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, মোহনবাগান মাঠে কোনওমতে খেলা করানো সম্ভব নয়। আসলে স্টেডিয়ামের নিচে আলাদা ড্রেসিংরুম থেকে শুরু করে জিম- সবই হচ্ছে। ফলে স্তূপাকার হয়ে আছে রট, সিমেন্ট। প্র্যাকটিসে ফুটবলারদের এখন মাঠে ঢুকতেই সমস্যা হয়। খেলা হলে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটবে। যখন-তখন দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন দর্শকরা। এমনকী ফুটবলাররা তার ব্যতিক্রম থাকবেন না। তাই পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে মোহনবাগান মাঠে খেলা করানো সম্ভব নয়। পুলিশ বাধা দিয়েছে। পাশাপাশি পূর্ত দপ্তরও ফিট সার্টিফিকেট দেয়নি। তাহলে ম্যাচ করা কীভাবে সম্ভব?
আইএফএ চেষ্টা চালিয়েছিল কল্যাণীতে ম্যাচটা নিয়ে যেতে। কিন্তু সেখানেও মাঠের কাজ চলছে। কিছুদিন বাদেই সাফ কাপের খেলা হবে কল্যাণীতে। যেখানে এশিয়ার নানান দেশ আসবে খেলতে। মাঠ সারানোর কাজ ভালমতো হয়নি বলেই রাজ্য ফুটবল সংস্থার কর্তাদের অনুরোধ রাখতে পারেনি কল্যাণীর অফিসিয়ালরা। তাই মোহনবাগান প্রথম লিগ অভিযানে নামবে ৬ তারিখে। প্রতিপক্ষ কাস্টমস। ততদিনে জিম, ড্রেসিংরুমের কাজ মোটামুটি শেষ হয়ে যাবে।
তবে মোহনবাগান ফুটবলাররা ম্যাচ খেলার মানসিকতা নিয়ে আজ প্র্যাকটিসে নেমেছিলেন। কোচ ভিকুনা প্রত্যেককে প্র্যাকটিসের আগে জানিয়ে দেন, কাল খেলা আছে। সেইভাবে তাঁরা অনুশীলন করবেন। ক্রসিং থেকে ম্যাচ সিচুয়েশন- সবই ফুটবলারদের বোঝান তিনি। জানিয়ে দেন, লিগের প্রতিটি ম্যাচকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুটবলারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলা চলবে না। তাই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বলেই ফেললেন, “ম্যাচ বন্ধ হয়ে গেলে সত্যিই কিছু বলার থাকবে না। বিশ্বাস করুন আমরা কিন্তু খেলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। কোচও আমাদের প্র্যাকটিস শুরুর আগে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য হল না।”
গতবার রানার্স ছিল পিয়ারলেস। অর্থাৎ দল হিসাবে ওজনদার ছিল। যে কোনও টুর্নামেন্টের শুরুতে প্রথম ম্যাচ বরাবর টাফ হয়। সেই দিক থেকে দেখলে পিয়ারলেস ম্যাচ বাতিল হয়ে মোহনবাগানের একপ্রকার ভালই হল। কয়েকটা ম্যাচ খেলার পর দলটা গুছিয়ে উঠলে পিয়ারলেসের সঙ্গে খেলতে সমস্যা হবে না। তারচেয়েও বড় কথা, মোহনবাগানের মাঠ হল তথাকথিত ছোট। ফলে ছোট মাঠে খেলতে নামলে দল সমস্যায় পড়ত। যদিও দলের এক ফুটবলার বলেই ফেললেন, “সেই দৃষ্টিকোণ থেকে অবশ্য আমরা ম্যাচটাকে দেখছি না। লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবতে বসলে হয় নাকি! আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। এখন না হলে আমরা তো দায়ী নই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.