সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফাইট, ঝুলন ফাইট…। কোন ক্ষিদ্দা কবে তাঁকে এ কথা বলেছেন, নাকি বলেননি সে প্রশ্ন আজ বৃথা। নিজের ভিতরের আগুনই তাঁকে তাতিয়েছে। আর সাফল্যের পথে ছুটিয়েছে দেশের জার্সি। সে ছোটা এখনও চলছে। আর চলতে চলতেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেছে নয়া মাইলস্টোন। বিশ্বে প্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ উইকেট প্রাপ্তির নজির স্পর্শ করেছেন। আর শিখরে দাঁড়িয়ে ঝুলন গোস্বামী বলছেন, অতীতকে তিনি এক মুহূর্তও ভোলেননি। ২০০ উইকেটের প্রত্যেকটিই তাঁর স্মৃতিতে ভাস্বর।
[ নতুন রেকর্ডের শৃঙ্গে ধোনি, আরও এক মাইলস্টোন স্পর্শ ]
২০০২-এ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ার শুরু করেছেন। ক্রমে হয়ে উঠেছেন গোটা দেশে ও বিশ্বে সমীহ জাগানো নাম। ঝুলন মানেই হার না মানা লড়াই। যখনই ভারতের জয়ের সামনে বিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছেন, অধিনায়ক ভরসা করে তাঁর হাতেই তুলে দিয়েছেন বল। তিনি ছুটছেন মানেই, দেশবাসী জানেন, ওই বাধা আর বেশিক্ষণ স্থায়ী নয়। নিজেকে এমনই তুখড়, ধারালো করে তুলেছেন। আর করে তুলেছেন বলেই আজ বিশ্ব ক্রিকেটের এমন মানচিত্রে তিনি দাঁড়িয়ে, যেখানে কোনও দ্বিতীয় মহিলা ক্রিকেটারের বাস নেই।
[ ‘দলের কথা ভেবেই চালিয়ে খেলেছি’, ম্যাচ জিতে বললেন কোহলি ]
নজির স্পর্শ করেও অবশ্য অতীতকে ভুলে যাননি ঝুলন। জানাচ্ছেন, ২০০ উইকেটের প্রত্যেকটিই তাঁর মনে আছে। বিসিসিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঝুলন বলেছেন, নজিরের কাছাকাছি পৌঁছে একটা সময় তিনি মনে মনে গোনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ তা ছেড়ে দেন। তিনি জানেন, বিপক্ষের চোখে চোখ রেখে সঠিক বলটি সঠিক জায়গায় ফেলতে পারলে উইকেট এমনিই আসবে। ব্যক্তিগত সাফল্য তো সবসময়ই আনন্দ দেয়। তবে ঝুলনের কাছে আজও দেশের সাফল্যই বড় কথা। জানিয়েছেন, জয়ী দলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকার যে অনুভূতি তার বিকল্প কিছু নেই। এবং ঝুলন যে পারফেক্ট টিম ম্যান এদিন নিজের সাক্ষাৎকারে সে কথা বারবার বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, উইকেট তাঁর ঝুলিতে এসেছে ঠিকই। কিন্তু প্রত্যেকটি উইকেটের পিছনে আছে নিখুঁত পরিকল্পনা। সতীর্থদের পরিশ্রম-ঘাম-সমর্থন। সে সব তিনি কী করে ভুলে যাবেন? ভুলে যানওনি। আর তাই ব্যক্তিগত সাফল্যের দিনেও ক্রিকেট যে টিম স্পোর্ট সে কথা জোর দিয়ে জানাতে ভুললেন না।
[ ফের নয়া রেকর্ড, শচীনকে টপকে দক্ষিণ আফ্রিকায় সর্বোচ্চ স্কোর কোহলির ]
আজও দেশের হয়ে খেলার সময় বাড়তি একটা চাপ অনুভব করেন। জার্সির সঙ্গেই যেন একটা দায়িত্ববোধ কাঁধে চাপে। আর সেই চাপেই এখনও ইনিংস ব্রেকে খেতে পারেন না ঝুলন। আজ সাফল্যের রঙিন দিনে পিছু ফিরে তাকিয়ে খানিকটা নস্ট্যালজিকই লাগে। মনে পড়ে জীবনের সংকটের মুহূর্তগুলো। মনে সেই হতাশার ভিতর ছোট ছোট দৌড়গুলো, যার যোগফলই জীবনের এই লম্বা রেস। আর চোখের সামনে ভেসে ওঠে দেশের নীল জার্সিটি। বহু সাফল্যের ভিতর দাঁড়িয়েও ঝুলন জানেন, জানানও, ওই জার্সিটা ছাড়া জীবনে যে আর কিছুই নেই!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.