Advertisement
Advertisement

ইংলিশ চ্যানেল পার করে বাংলার মুকুটে গর্বের পালক সায়নীর

১৪ ঘণ্টা ৮ মিনিটে পার করলেন ইংলিশ চ্যানেল।

Burdwan's swimmer Sayani Das Crossed English Channel, creates history
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 27, 2017 12:27 pm
  • Updated:July 27, 2017 12:27 pm  

সৌরভ মাঝি : জগৎসভায় আবার উজ্জ্বল বাংলা। গত রবিবার রাতে এক বঙ্গললনার দাপট দেখেছিল গোটা দুনিয়া। লর্ডসের বাইশ গজে ঝড় তুলেও সেদিন শেষ পর্যন্ত বিজয়িনী হয়ে উঠতে পারেননি বাংলার ঝুলন গোস্বামী।তবে তাঁর বোলিংয়ের ঝাঁজে ভেঙেচুরে গিয়েও ক্রিকেটের বিশ্বকাপ শেষমেশ হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয় ব্রিটিশ ব্রিগেড। তার ঠিক আটচল্লিশ ঘণ্টা পরেই আবার নজরে বাংলা। সাঁতরে ইংলিশ চ্যানেল পার হয়ে বাংলার মুকুটে গর্বের নয়া পালক এনে দিলেন বর্ধমানের কালনার সায়নী দাস। আবহাওয়া ছিল ঘোর প্রতিকূল। চালু রীতি ভেঙে রাতের বদলে ভরদুপুরে সাগরে নেমে বুধবার ভোর তিনটে তিন মিনিটে শেষ পর্যন্ত টার্গেট ছুঁয়ে ফেলেন সায়নী। ইংলিশ চ্যানেল জয় করেন চোদ্দো ঘণ্টা আট মিনিটে।

[এবার হিন্দি ছোটপর্দায় ‘ভুতু’, দেখুন তার এক্সক্লুসিভ লুক]

১৯৫৯ সালে আরতি সাহা। কোনও এক বঙ্গললনার সাগর সাঁতরে ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ের সেই শুরু। তারপর বুলা চৌধুরি, অমৃতা দাস, রেশমী শর্মা, তাহরিনা নাসরিনের পর আবার সেই মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন তরুণী সায়নী। এঁদের মধ্যে রেশমী এই বাংলারই বাসিন্দা বটে। তবে বাঙালি নন। সেই নিরিখে পঞ্চম বাঙালি মহিলা সাঁতারু হিসাবে সাগর জয় করলেন সায়নী। গর্বের সেই মুহূর্তের ছবি নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তিনি। কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি বটে, তবে ছবিতেই ধরা পড়েছে তাঁর উচ্ছ্বাস। আর তারপর থেকেই অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন কালনার এই তরুণী। উচ্ছ্বাসে মেতেছে বাংলার সাঁতার-মহল থেকে শুরু করে সায়নীর পাড়াও।

Advertisement

[রাতের শহরে জমজমাট ‘নাটক’, হোমগার্ডকে চুম্বন মদ্যপ মহিলার]

রিষড়ার সুইমিং পুলে তমাল দাসের কাছে অনুশীলন করেছেন সায়নী। মধ্যবিত্ত পরিবারের একরত্তি মেয়ের সাগর জয়ের স্বপ্ন পূরণের ঝক্কি বড় কম ছিল না। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক রাধেশ্যামবাবু ছোট মেয়ের ইচ্ছা পূরণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। পাশে পেয়েছেন শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর পাপ্পু সিং-সহ আরও অনেককেই। কাউন্সিলর এক লক্ষ টাকা দেন সায়নীর অভিযানে। তাঁর ইংলিশ চ্যানেল জয়ের স্বপ্নপূরণে বাংলার অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন, রাজ্য সরকারও সহযোগিতা করেছে সায়নীকে। বিলেতের মাটিতে মেয়ের স্বপ্ন পূরণের সাক্ষী হতে রাধেশ্যামবাবু সস্ত্রীক ছুটে গিয়েছিলেন। সাঁতারের বড় মঞ্চে লড়ার জন্য উচ্চমাধ্যমিকের পর মেয়েকে হুগলির শ্রীরামপুর কলেজে ভর্তি করেছিলেন। এখন তৃপ্তির হাসি হাসছেন তিনিও।

[ধাওয়ান-পূজারার জোড়া ফলায় বিদ্ধ লঙ্কাবাহিনী]

রাজ্য সাঁতার সংস্থার সভাপতি রামানুজ মুখোপাধ্যায় সায়নীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “সায়নীর ইংলিশ চ্যানেল জয়ের পরিবেশ ও পরিস্থিতি খুবই প্রতিকূল ছিল। সেই দিক থেকে সায়নীর লড়াই তাৎপর্যপূর্ণ।” তিনিই জানিয়েছেন, এবারই প্রথম চ্যানেল সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ফ্ল্যাগ অফ করেছিলেন। সায়নীর অবজার্ভার ছিলেন অ্যান্ডি পোপ। সেখানকার পরিবেশ ও আবহাওয়া খুবই প্রতিকূল ছিল। সেই অবজার্ভার এবং সায়নীর জেদের কাছেই শেষ পর্যন্ত সব প্রতিবন্ধকতা খড়কুটোর মতো উড়ে যায়। বঙ্গতনয়ার বিশ্বমঞ্চে সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাজ্য সাঁতার সংস্থার অন্য কর্তারাও। পূর্ব বর্ধমানের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “আমাদের গর্বিত করেছে সায়নী। শুধু জেলাকেই নয়, রাজ্যকে, দেশকেও গর্বিত করেছে আমাদের কালনার এই মেয়ে।” খবর ছড়াতেই এদিন কালনায় সায়নীর পাড়ায় শুরু হয়ে যায় উৎসব। উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন গোটা তল্লাটের মানুষ। আপাতত সাগর বিজয়িনীকে কাছে পাওয়ার অপেক্ষায় সময় গুনছেন তাঁরা।

[পারফরম্যান্সই আমাদের হয়ে কথা বলেছে, ঘরে ফিরে বললেন মিতালি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement