সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখের সামনে সতীর্থর বল বিকৃতির ঘটনা দেখেও প্রতিবাদ জানাননি স্টিভ স্মিথ। যার জেরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন অজি অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলেই কটাক্ষ করা হয়েছে। তবে ক্রিকেটপ্রেমীদের ক্ষোভ আইসিসি-র বিরুদ্ধে। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে একহাত নিয়েছেন ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিংও। তাঁর বক্তব্য, বল বিকৃতির প্রমাণ হাতে থাকতেও এখনও পর্যন্ত ব্যানক্রফট, স্মিথদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নিল না আইসিসি। অর্থাৎ পক্ষপাতদুষ্টের মতোই কাজ করছে তারা। একইভাবে ক্ষুব্ধ ক্রিকেটপ্রেমীরাও। বল বিকৃতির কাণ্ডের পরও কীভাবে আইসিসি স্মিথ, ওয়ার্নারদের খেলার সুযোগ দিচ্ছে, এমন প্রশ্নেও তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। স্মিথকে এক টেস্টে সাসপেন্ড করে আইসিসি। ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফি কাটা হয়। অন্যদিকে ব্যানক্রফটের ৭৫ শতাংশ ম্যাচ ফি কাটা গিয়েছে এই অপরাধের জন্য। তাঁদের প্রতি আইসিসি-র এমন নরম মনোভাবেই ক্ষুব্ধ ক্রিকেটমহল। তবে শোনা যাচ্ছে, অজি বোর্ড কঠোর শাস্তির পথেই হাঁটতে চলেছে। স্মিথকে এক বছরের জন্য নির্বাসিত করতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড।
শুধু স্মিথই নন, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার শাস্তি মুখে পড়তে চলেছেন সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারও। যা খবর, ছ’মাসের জন্য নির্বাসনে পাঠানো হতে পারে তাঁকে। তবে শুধু ক্রিকেটাররাই নন, কোচ ড্যারেন লেহম্যানের ভবিষ্যৎ নিয়েও উঠেছে প্রশ্নচিহ্ন। ক্রিকেটপ্রেমীদের বিশ্বাস ফেরাতে তাঁকে কোচের পদ থেকে বরখাস্তও করতে পারে বোর্ড বলে খবর। ভারতীয় সময় বুধবার সন্ধের মধ্যেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন অজি বোর্ডের সিইও জেমস সাদারল্যান্ড। ইতিমধ্যেই বোর্ডের অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে গিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন পাঁচ উইকেট হাতে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৯৪ রানে এগিয়ে ছিল। শনিবার নিউল্যান্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ডার ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে বল নিয়ে কিছু করতে দেখা যায়। টিভিতেও ধরা পড়ে সেই বিতর্কিত দৃশ্য। পরে ব্যানক্রফট স্বীকারও করেন, তিনি ফিল্ডিংয়ের মাঝে সুযোগ বুঝে টেপ আর মাটির গুঁড়ো দিয়ে বল বিকৃতির চেষ্টায় ছিলেন। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্মিথও মেনে নেন, যা হয়েছে তা খেলার নীতির বিরোধী। অর্থাৎ তাঁর জ্ঞানত অবস্থাতেই যে গোটা বিষয়টি ঘটেছে, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। গোটা ঘটনার নিন্দে করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। কড়া পদক্ষেপের দাবিও তোলেন। এরপরই কেপটাউন টেস্টে অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের পদ থেকে স্মিথ ও ওয়ার্নারকে সরিয়ে দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
Life ban will be really harsh for them. Not just for them, but for any player. You have to give them credit that they admitted their mistake. I think to step down from the captaincy & one test match ban is enough for both the players: Ashish Nehra #BallTampering #Australia pic.twitter.com/q3UGHiZyLQ
— ANI (@ANI) March 26, 2018
তবে এমন অখেলোয়াড়োচিত কাণ্ড ঘটানোর পরও আইসিসি-র সিদ্ধান্তে হতবাক সকলেই। এত কম শাস্তি? আইসিসি-র শিরদাঁড়া নেই বলেও কটাক্ষ করা হয়। তবে অজি বোর্ড কঠোর পদক্ষেপই করছে বলে খবর। বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী, মাঠে বল বিকৃতির মতো ঘটনা ঘটালে সর্বোচ্চ আজীবন নির্বাসন হতে পারে কোনও ক্রিকেটারের। তবে বোর্ডের শাস্তি মুখে পড়ার আগেই আইপিএল-এ নেতৃত্ব খোয়ালেন স্মিথ। রাজস্থান রয়্যালসের নেতার দায়িত্বে ছিলেন স্মিথ। ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফে এদিন জানিয়ে দেওয়া হল, স্মিথের পরিবর্তে অজিঙ্ক রাহানেকে অধিনায়ক করা হল। এদিকে হায়দরাবাদের অধিনায়ক ওয়ার্নারের আইপিএল খেলা নিয়েও তৈরি হল ধোঁয়াশা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.