সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোট্ট ছেলে। নাম মুর্তাজা আহমেদি। মেসির খুদে ফ্যান হিসাবে যে আফগানিস্তানের মেসি বলে গোটা বিশ্বে পরিচিত। সেই মুর্তাজার দিন কাটছে আতঙ্কে। তালিবান জঙ্গিদের হুমকিতে ছোট ছেলেটির পরিবার এখন ঘড়ছাড়া। দক্ষিণ-পূর্ব গজনি প্রদেশে নিজেদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তার পরিবার।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের এই সাত বছরের খুদে শিশুর জীবনকথা রূপকথাকেও হার মানায়। জার্সি কেনার সামর্থ্য না থাকায় প্লাস্টিক দিয়ে মেসির জার্সি তৈরি করেছিল এই মেসির খুদে ফ্যান। এই ভালবাসায় আপ্লুত হয়েছিল গোটা বিশ্ব। লিওনেল মেসি নিজেও আবেগে ভেসে গিয়েছিলেন। দেখা করতে চেয়েছিলেন। পরে কাতারে প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে মুর্তাজার সঙ্গে দেখা হয়েছিল মেসির। কোলে তুলে নিয়েছিলেন খুদে ফ্যানকে। সেই সুখের মুহূর্ত এখন অতীত। মুর্তাজাদের পরিবার এখন তালিবান হুমকির আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মা শাফিকা জানিয়েছেন, ‘‘একদিন স্থানীয় এক ব্যক্তি ফোনে বলে, তোমরা এখন প্রচুর অর্থের মালিক। মেসির কাছ থেকে যে অর্থ পেয়েছ তা দিয়ে দাও। না হলে তোমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যাব। যদি একবার আমরা তাকে হাতে পাই, তা হলে তাকে টুকরো টুকরো করে কাটব।” এরপর তালিবান হামলায় মুর্তাজাদের পরিবার-সহ আরও ১০০টি পরিবার এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়।
[স্বপ্নের নায়কের দেখা পেল মেসির সেই খুদে ভক্ত]
হামলার ফলে মুর্তাজার বাবা-মা ঘরে ফিরতে পারছেন না। মুর্তাজার মা বলছিলেন, “একদিন রাতে এক ব্যক্তি আমাদের ঘরের পাশে ঘোরাফেরা করছিল। তারপরই এই ধরনের ফোন আসে। তারপর থেকে আমরা আর মুর্তাজাকে বাইরে খেলতে পাঠাচ্ছি না।” গত নভেম্বরে তাঁরা বাড়ি ছেড়েছেন। তারপর থেকে আর বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বাড়ি ফেরা মুর্তাজাদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এখন তারা কাবুলে রয়েছে। এমনকী, মেসি যে ফুটবল এবং জার্সি দিয়েছিলেন তা ফেলে এসেছেন। মুর্তাজার মা জানিয়েছেন যে, তালিবানদের উপদ্রব মাঝে কিছুটা কমলেও আবার তা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের হুমকি বাড়ছে। তাঁদের পক্ষে ফিরে যাওয়াটা কার্যত অসম্ভব। কারণ, তাঁর ছেলেকে পেলেই তালিবানরা মেরে ফেলবে। তাঁর বক্তব্য, “আমরা বাঁচার জন্য ঘর ছেড়েছি। বাধ্য হয়েছি। এভাবে বাঁচা যায় না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.