কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: কঠিন বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহার্য করে তা মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল নিউটাউনে। নিউটাউন কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগে যুক্ত হয় মার্লিন সংস্থার CSR বিভাগের আইএম শাখা। কলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজ সংস্থাও যুক্ত হয় একইসঙ্গে। একত্রিতভাবে শুরু হওয়া সেই কাজ এগোল আরও একধাপ। বৃহস্পতিবার পুনর্ব্যবহার্য দ্রব্য দিয়ে তৈরি জিনিসপত্রের একটি সংগ্রহশালার উদ্বোধন হল নিউটাউনে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘জিরো ওয়েস্ট স্টোর’ (Zero Waste Store)।
ঠিক কেমন এই ‘জিরো ওয়েস্ট স্টোর’? জানা গিয়েছে, এখানে থাকবে ফেলে দেওয়া বর্জ্য দিয়ে তৈরি বিভিন্ন জিনিস। বৃহস্পতিবার প্রদর্শনের জন্য ছিল ফেলে দেওয়া কাগজ দিয়ে তৈরি টেবিল, বালতি থেকে তৈরি বসার মোড়া, বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তৈরি করা কানের দুল, চুলের ক্লিপ-সহ একাধিক সামগ্রী। সাধারণ মানুষ স্টোরে গিয়ে এগুলি পছন্দ করে কিনতে পারবেন। এর পাশাপাশি নিজেদের বাতিল হয়ে যাওয়া কঠিন বর্জ্য ওই স্টোরে রেখেও আসতে পারেন বাসিন্দারা। সিএসসিএইচ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউটাউন কলকাতা গ্রিন স্মার্ট সিটি কর্পোরেশন লিমিটেড ‘জিরো ওয়েস্ট স্টোর’টি চালানোর দায়িত্ব দিয়েছে কলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজকে। এই সংস্থা সংগ্রহশালায় সারা বাংলার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্যসামগ্রী এখানে প্রর্দশিত ও বিক্রির ব্যবস্থা করবে। এছাড়া এখানে নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন হবে। হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন এদিন এর উদ্বোধন করেন। ছিলেন কোলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজ এর কর্ণধার শ্রী সৌরভ মুখোপাধ্যায় ও টেকনো কলেজের আধিকারিক পওলিন লারভের।
এদিন অনুষ্ঠানে দেবাশিস সেন জানিয়েছেন, বাতিল জিনিস নষ্ট না করে আবার ব্যবহারের উপযোগী করলে পরিবেশ অনেকটাই বাঁচে। পরিবেশ রক্ষায় জন্য এই পদক্ষেপ করা উচিত। প্রসঙ্গত, নিউটাউনে কঠিন বর্জ্য পদার্থ পৃথক করার কাজ শুরু হয়েছে। মানুষ যাতে এ বিষয়ে শিখতে ও জানতে পারেন, তার জন্য কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। সেখান থেকে মানুষ জানতে পারবেন কীভাবে বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা সম্ভব।
গত বছর আইএম কলকাতা, মার্লিন গ্রুপ-এর সিএসআর শাখা এবং কোলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজ যৌথ ভাবে নিউটাউন অঞ্চলে এই ব্লকের প্রায় ১৫০ পরিবারের সঙ্গে ‘আবর্তনী’ নামের একটি প্রকল্পের সূচনা করেন। এর মাধ্যমে ওই ব্লকের বাসিন্দারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিজেদের ব্যবহারের জিনিস বিনামূল্যে দান করেছেন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা সেই জিনিস থেকেই বানিয়েছেন বহু পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী। সেসবও রাখা থাকবে নিউটাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছের এই সংগ্রহশালায়। মার্লিন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাকেত মোহতার উদ্যোগে এটি শুরু হয়েছিল। বর্তমানে অনলাইন পোর্টাল তৈরি করে প্রকল্পটির প্রচারের পরিকল্পনা রয়েছে KSCH’এর। রয়েছে নিয়মিতভাবে বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপও করার ভাবনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.