Advertisement
Advertisement

Breaking News

North Sikkim

উত্তর সিকিমে ঘন ঘন ভূমিধসের কারণ কী? অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞ দল

বর্ষার মরশুমে অবিরাম ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়ে থাকে এলাকায়। ওই পরিস্থিতিতে খাড়া পাহাড়ি ঢাল, এবং নরম মাটির গঠন বিপদ বাড়িয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তবে সমীক্ষা চলবে।

Why does North Sikkim face frequent landslide, Special team ZSI to survey

ফাইল ছবি।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 4, 2024 9:53 pm
  • Updated:July 4, 2024 9:53 pm

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ভারী বৃষ্টিপাত, খাড়া পাহাড়ি ঢাল, টোপোগ্রাফি এবং নরম মাটির গঠনের জন্যই কি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অমর্ত্য ভূমি উত্তর সিকিম বারবার ভূমিধসে বিধ্বস্ত হচ্ছে? উত্তরের খোঁজে ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’-র (NDMA) বিশেষজ্ঞ দল মঙ্গন জেলার বিধ্বস্ত এলাকায় সমীক্ষার কাজ শুরু করলেন। বুধবার থেকে দলটি মংশিলা, নাগা, সঙ্কলং এবং ফিদাং এলাকা ঘুরে দেখে ভূমিধসের কারণ এবং প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। এলাকার প্রবীণদের কথাও তাঁরা শুনছেন। এনডিএমএ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা ফিরে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি? সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে রিপোর্ট পেশ করবেন।

উত্তর সিকিমে মঙ্গন জেলায় ভূমিধস (Landslide) ‘বাৎসরিক উৎসবে’ পরিণত হয়েছে। যে কারণে ভীষণভাবে মার খাচ্ছে পর্যটন শিল্প। কারণ, এখানেই রয়েছে জিরো পয়েন্ট, ইয়ংথাং ভ্যালি, কাটাও, গুরুদোংমার লেক, চোকথা ভ্যালি। পর্যটকরা এলাকাটিকে একটুকরো স্বর্গ বলেই মনে করেন। অথচ এখানেই যত বিপদ। গত জুন মাসে অতি ভারী বর্ষণের জেরে পর পর ভূমিধসে মঙ্গন জেলার রাস্তাগুলো বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। হড়পা বানে (flash flood)ভেসে যায় একাধিক সেতু। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা। ধসে চাপা পড়ে, হড়পা বানে ভেসে ছজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্তত দেড় হাজার পর্যটক এক সপ্তাহ ধরে আটকে থেকে। এর পরই সিকিম (Sikkim) সরকারের তরফে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়। সেই সূত্রে ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’-র (এনডিএমএ) বিশেষজ্ঞ দল মঙ্গনে পৌঁছেছেন। সংস্থার ডেপুটি কমান্ডান্ট রজত মালহোত্রার নেতৃত্বে দলটি কাজ করছে। সঙ্গে রয়েছেন সিকিম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এসএসডিএমএ) আধিকারিকরা। দলটি মঙ্গনের জেলাশাসক অনন্ত জৈনের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনাও সেরেছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আতঙ্কের নাম অ্যামিবা! কিশোরের মস্তিষ্ক কুরে কুরে খেল আদ্যপ্রাণী, ৩ মাসে তৃতীয় মৃত্যু]

জানা গিয়েছে, এনডিএমএ দলটি ভূমিধস বিধ্বস্ত মংশিলা, নাগা, সঙ্কলং এবং ফিদাং এলাকা পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করছে। প্রাথমিকভাবে দলের বিশেষজ্ঞরা এলাকায় বৃষ্টিপাতের (Rain)পরিসংখ্যান দেখে অবাক হয়েছেন। বর্ষার মরশুমে অবিরাম ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়ে থাকে এলাকায়। ওই পরিস্থিতিতে খাড়া পাহাড়ি ঢাল, এবং নরম মাটির গঠন বিপদ বাড়িয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তবে সমীক্ষা (Survey) চলবে। ভূমিধস সংক্রান্ত সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে। এই তথ্য যে নতুন এমনটা মনে করার কারণ নেই বলে মনে করছেন উত্তরের ভূ-গবেষক মহল। তাদের মতে দার্জিলিং, কালিম্পং, বক্সা এবং সিকিম বয়সে নবীন পাললিক শিলা দিয়ে গঠিত হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত। ভূতাত্ত্বিকভাবে দুর্বল শিলাস্তরের জন্য এখানে সামান্য বৃষ্টিতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। মেঘালয়ে ঠিক উলটো। এখানে শক্ত শিলাস্তরের জন্য ধসের সমস্যা তেমন নেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: এসসিও-র ফাঁকে চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, সীমান্ত সংঘাত নিয়ে কী বার্তা জয়শংকরের?

জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (ZSI) একটি রিপোর্টে দেশে ৩ হাজার ৩৭৭টি ভূমিধস প্রবণ অঞ্চলের উল্লেখ রয়েছে। তার মধ্যে দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম, বক্সা পাহাড় রয়েছে। বলা হয়েছে এখানে কোনও নির্মাণ কাজ করা উচিত নয়। কিন্তু সেটা মানা হয়নি। পাহাড়েও বহুতলের ভিড় বেড়েছে। নরম পাথর কেটে রাস্তা, নিকাশি নালা, নদী বাধ তৈরি হচ্ছে। ফলে বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে ধসে যাচ্ছে। ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার বলেন, “কালিম্পংয়ের পাথর হাতের চাপে গুড়ো হয়ে যায়। একই অবস্থা সিকিমের ভূস্তরের। কারণ, এটা নবীন পাললিক শিলা। এটা চাপ সহ্য করার শক্তি এখনও অর্জন করেনি। অথচ দিনের পর দিন চাপ বেড়েই চলেছে। তাই ভূমিধসের বিপর্যয় ফিরে আসছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ