সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (UAE) ও ওমান (Oman)। ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টিতে পথঘাট ভাসছে জলে। ঘরবাড়ি, বিমানবন্দর জলে জলাক্কার। বহু মানুষ ঘরবন্দি। ওমানে ২০ জন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি দপ্তর থেকে স্কুল, সবই বন্ধ। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার এমন নজিরে বিস্মিত আবহাওয়াবিদরা। মরুদেশ আমিরশাহীতে বৃষ্টি এক বিরল ঘটনা। সেখানেই এমন বন্যা পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্কের। কেন ঘটল এমন? বলা হচ্ছে এর পিছনে দায়ী মানুষই!
আসলে আরবদেশে বৃষ্টির দেখা মেলে না। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। সেখানেই এমন বৃষ্টির ঘনঘটার (Thunderstorm) পিছনে রয়েছে ‘ক্লাউড সিডিং’! নামেই বোঝা যাচ্ছে, এ হল মেঘবীজ বপন করার কৃত্রিম পদ্ধতি। এর সাহায্যে বৃষ্টিপাত ঘটানো যায় কৃত্রিম ভাবে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে এমনটা মাঝে মাঝেই ঘটানো হয়। মেঘের উপরে ছড়িয়ে দেওয়া হয় রাসায়নিক। বলা হচ্ছে সেটাই ‘ব্যুমেরাং’ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সম্প্রতি কিন্তু এমন কিছু করা হয়নি।
সেক্ষেত্রে উঠে আসছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও। আরব আমিরশাহী প্রশাসনের আবহাওয়া বিভাগে কর্মরত আবহাওয়াবিদ এসপা আলনাকবির দাবি, উপরের বায়ুমণ্ডলে একটি নিম্নচাপ ভূপৃষ্ঠের নিম্নচাপের সঙ্গে মিলিত হয়ে বায়ুতে প্রবল চাপের সৃষ্টি করেছে। ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি অঞ্চলের উষ্ণ আবহাওয়া এবং উপরের শীতল আবহাওয়ার মধ্যে সেই চাপ আরও ঘনীভূত হয়েই শক্তিশালী ঝঞ্ঝার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এপ্রিল মাসে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্রেডরিক ওট্টো নামে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের এক বর্ষীয়ান অধ্যাপক জানাচ্ছেন, সারা পৃথিবীতেই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে। এর পিছনে রয়েছে আবহাওয়ামণ্ডলের ক্রমশই আরও বেশি উত্তপ্ত হয়ে ওঠা। তিনিও ‘ক্লাউড সিডিং’-এর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর মতে, ক্লাউড সিডিং পদ্ধতিতে আকাশে থাকা জলকণাকেই টেনে এনে মেঘকে ভারী করে বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়। কিন্তু সেজন্য আর্দ্রতা প্রয়োজন। যা আবহাওয়ামণ্ডলের উষ্ণতা থেকেই আসতে পারে। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত। মেঘবীজ বপন হোক কিংবা আবহাওয়ামণ্ডলের উত্তপ্ত হয়ে ওঠা, এর পিছনে রয়েছে মানুষ। প্রকৃতির স্বাভাবিক সামঞ্জস্যকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করার খেসারতই গুনতে হচ্ছে মানুষকে। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.