সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যা ভাবা হয়েছিল, তেমনটা ঠিক নয়। চাঁদের স্নিগ্ধ রূপে মানুষ কবে থেকে মুগ্ধ হয়েছে? এরই উত্তর খুঁজতে গিয়ে পদ পদে বিস্মিত হচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সৌজন্যে চিনের চন্দ্রযান চেং’ই-৫ (Cheng’e-5)। এই চন্দ্রযান থেকে পাওয়া নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন, ২০৯ কোটি বছর আগে নয়, আরও একশো কোটি বছর পরও চাঁদে লাভাস্রোত উগরে দিয়েছিল আগ্নেয়গিরি (Volcano)। পরে ধীরে ধীরে শান্ত হয় পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ।
গত ডিসেম্বরে চাঁদে যান পাঠিয়েছিল চিন (China)। এ বছরই ফিরেছে চেং’ই-৫। চিনের চাঁদের দেবী হিসেবে চেংয়ের নামের অনুকরণে এই চন্দ্রযানের নাম রেখেছিল শি জিনপিংয়ের দেশ। চন্দ্রযান উপগ্রহ থেকে প্রায় ১৭৩১ গ্রাম নমুনা নিয়ে ফিরে এসেছে। সেসব পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পাথর, মাটির নমুনা দেখে বিজ্ঞানীরা বয়সও বুঝতে পেরেছেন। পাথরের যে রূপান্তর, তা থেকে বোঝা যায়, ১৯৬ কোটি বছর আগেও চাঁদের বুকে সক্রিয় ছিল আগ্নেয়গিরি। সেখান থেকে লাভাস্রোত (Lava) উগরে ভাসিয়ে দিত চন্দ্রপৃষ্ঠ।
আগে মনে করা হয়েছিল, প্রায় ২১০ কোটি বছর আগেই বুঝি চাঁদে সবরকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ঝঞ্ঝা থেমে গিয়েছিল। কিন্তু চেং’ই-৫ এর নমুনা বলছে, মোটেই তা নয়। অনেকদিন চাঁদের মাটিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। চাঁদের লাভাস্রোতে প্রচুর পরিমাণ তেজস্ক্রিয় (Radioactive)পদার্থ মিশে থাকত বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
চেং’ই-৫’এর চন্দ্রাভিযান নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন চিনা বিজ্ঞানীরা। তাতে এক বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, চাঁদের যে অংশ সমুদ্র ছিল, সেই অংশের পাথরেই সবচেয়ে বেশি ধরা পড়েছে চাঁদের পরিবর্তনগুলি। লাভার সঙ্গে ইউরেনিয়াম (Uranium), থোরিয়াম, পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ম্যাগমা দীর্ঘ সময় ধরে বিকিরণ করেছে। তারপর ধীরে ধীরে স্থায়িত্বের পথে এগিয়েছে এবং শীতল হয়েছে চাঁদ। চেং’ই-৫’এর অন্যতম মূল লক্ষ্য ছিল, চাঁদের অগ্ন্যুৎপাত নিয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা। তাই তার নিয়ে আসা নমুনা থেকে সেই পরীক্ষাই আগে করা হয়। চিনা বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনা, চেং’ই-৬ এবং চেং’ই-৭, আরও দুটি চন্দ্রযান পাঠানো হবে। এই দুটি চন্দ্রযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে নমুনা সংগ্রহের কাজ চালাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.