অরূপ বসাক, মালবাজার: প্রজনন কেন্দ্র তৈরির মধ্যে দিয়ে বাস্তুতন্ত্রের প্রয়োজনে লুপ্তপ্রায় শকুনকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ বাড়ছে বনদপ্তরের। আর সেই কাজ সাফল্যের পথে এগিয়েও ধাক্কা খেল। মালবাজার মহকুমার বাগরাকোটের এমইএস-এর কাছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দুটি পূর্ণবয়স্ক শকুনের। বিদ্যুতের তারে তাদের দেহ ঝুলতে দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত স্থানীয় মানুষজন। পরে বনদপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ দুটি উদ্ধার করে লাটাগুড়িতে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। এই ঘটনায় শকুন বাঁচানো নিয়ে ফের চিন্তিত বন আধিকারিকরা।
বর্তমানে অবলুপ্তির পথে শকুন। সেই কারণে রাজাভাতখাওয়ায় শকুনের প্রজনন কেন্দ্র মাধ্যমে শকুনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে চেষ্টা করছে বনদপ্তর। সেই কাজে সাফল্যও পাচ্ছে বন দপ্তর। কিছুদিন আগে মালবাজার মহকুমার বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় লিস নদীর চরে একঝাঁকে প্রায় ২৫-৩০ টি মত শকুনের দেখা মিলেছিল। আর এতেই খুশি হয়েছিল বন দপ্তর এবং পরিবেশপ্রেমী মহল। কারণ, ওই এলাকায় ইদানিং শকুনের দেখা পাওয়া ক্রমশই বিরল হয়ে উঠেছিল।
সেই আনন্দের মাঝেই ধরা পড়ল হতাশাজনক দৃশ্য। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে দুটি বড় শকুনের মৃত্যু হয়েছে বাগরাকোটে। এই খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তারঘেরা, চেল রেঞ্জের বনকর্মিরা ছুটে আসেন। তাঁরা দেখেন, একটি শকুন বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে আছে, আরেকটি শকুন বিদ্যুতের তারেই ঝুলে রয়েছে। খবর দেওয়া হয় বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের। তাঁরাই বিশেষ কৌশলে শকুন দুটিকে উদ্ধার করে। তারঘেরা বন দপ্তরের রেঞ্জার শুভজিৎ মৈত্র জানিয়েছেন, মৃত শকুন দুটোকে লাটাগুড়ির এনআইসি-তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে ময়নাতদন্ত হবে।
বিদ্যুৎ দপ্তরের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অপূর্ব ভৌমিক বলেন, “এটা সত্যি দুঃখজনক ঘটনা, যেখানে শকুন দু’টি বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েছে, সেখানে ১১ কেবি লাইনে রয়েছে। কোনও কারণে এই ইলেকট্রিক খুঁটিতে বসেছিল শকুন দুটি, তাতেই মৃত্যু হয়েছে তাদের।” এ ঘটনায় হতাশ স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী মহল। পরিবেশপ্রেমী শেখর দে, রাসেল সরকারের কথায়, “একেই শকুন দিন দিন কমে যাচ্ছে, তার উপর এই ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুটি বড় শকুনের মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। তবে সুখবর, বহুদিন বাদ আবার শকুন দেখা যাচ্ছে এলাকায়। আশা করি, এই সংখ্যা বাড়বে। তবে বিদ্যুৎ দপ্তরকেও আরেকটু সচেতন হতে হবে, ওদের বাঁচানোর ক্ষেত্রে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.