সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘অন্ধকারে চৌরাশিটা নরকের কুণ্ড তাহাতে ডুবায়ে ধরে পাতকীর মুণ্ড।’ সত্যিই কি রয়েছে এমন নারকীয় কুণ্ড? এই নশ্বর দুনিয়ার ওপারে কী আছে তা আজও অজানা, কিন্তু এই পৃথিবীতেই রয়েছে এমন এক নরক থুড়ি ‘নরকের দরজা’ (Gateway to Hell), যেখানে অনর্গল দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন! তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমিতে গত ৫০ বছর ধরে জ্বলতে থাকা সেই আগুনকে ঘিরে বিস্ময়ের কমতি নেই। তবে এবার এই আগুনমুখো গহ্বরের দরজা বন্ধ হবে। তেমনই নির্দেশ সেদেশের প্রেসিডেন্টের।
কিন্তু কী করেই বা সৃষ্টি হল ওই গহ্বরের? কেনই বা সেটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত?
২২৯ ফুট চওড়া এবং ৬৬ ফুট গভীর এই গহ্বরে ১৯৭১ সাল থেকে জ্বলছে আগুন। আসলে এই গহ্বরের মধ্যে রয়েছে মিথেন। দাহ্য এই গ্যাসের অনর্গল জ্বলন দেখলে বিস্মিত হওয়াই স্বাভাবিক। আর সেই কারণেই নিয়মিত পর্যটকরা এখানে ভিড় জমান।
আসলে গত শতকের সাতের দশকের গোড়ায় ওই মরুভূমিতে সোভিয়েত রাশিয়ার ভূতত্ত্ববিদরা তেলের খোঁজে খনন শুরু করেছিলেন। সেই সময়ই ভুলবশত প্রাকৃতিক গ্যাসের এক ভাণ্ডারে আঘাত লেগে যায়। ফলে মাটি ধসে সৃষ্টি হয় অতিকায় গহ্বরের। গহ্বরের মধ্যে থাকা মিথেন যাতে হু হু করে বাতাসে ছড়িয়ে না পড়তে পারে তাই বিজ্ঞানীরা তাতে আগুন লাগিয়ে দেন। তাঁদের ধারণা ছিল বড়জোর কয়েক সপ্তাহ লাগবে, তার মধ্যেই পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে সমস্ত মিথেন। কিন্তু তাঁদের ধারণা ছিল একেবারেই ভুল। সেই যে আগুন জ্বলে উঠেছিল আজও তা নেভেনি। ২০১৩ সালে এক রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষ কানাডার জর্জ কৌরোনিস সেই গহ্বরের পেটের ভিতরে অ্যাডভেঞ্চারও করে আসেন। সাধারণ পর্যটকদের তেমন দুঃসাহস না হলেও তাঁরা দল বেঁধে এসে ওই আগুনের লেলিহান সৌন্দর্য বাইরে থেকেই প্রত্যক্ষ করে গিয়েছেন।
কিন্তু এবার তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বার্দিমুখামেদভ নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনও ভাবে ওই গহ্বরের আগুন নেভাতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে পরিবেশ ও স্থানীয় মানুষদের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে ওই আগুন, তাই সেটি অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.