কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: করোনা (Coronavirus)আতঙ্ক কাটিয়ে দীর্ঘ সাত, আট মাস পর ক্রমশ ছন্দে ফিরছে জনজীবন। অন্যান্য জায়গার মতো ভিড় বাড়ছে সল্টলেক, সেক্টর ফাইভের শিল্পতালুক এবং নিউটাউনের অফিস পাড়াগুলিতে। করোনা সময়কালে লকডাউনে যানবাহনের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। কলকারখানার অধিকাংশই ছিল বন্ধ। কলকাতা এবং শহরতলির বায়ুদূষণের (Air Pollution) মাত্রা এর ফলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল বলে জানা গিয়েছে। জনজীবন স্বাভাবিক হতে থাকায় রাস্তায় বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। ফলে দূষণের মাত্রা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তা রুখতে আগেভাগেই দূষণ নিয়ন্ত্রণে এক অভিনব উদ্যোগ নিল নিউটাউন এবং সেক্টর ফাইভ কর্তৃপক্ষ। শামিল বিধাননগর পুলিশও।
দেখা গিয়েছে, বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস গাড়ির ধোঁয়া। আর তা নিয়ন্ত্রণে আনা খুব কঠিন নয়, একটু চেষ্টাতেই তা সম্ভব। এই কাজ সফল করতে ডিসেম্বর মাসজুড়ে প্রচারাভিযান চলবে নিউটাউন এবং নবদিগন্ত জুড়ে। মূলত পাঁচটি জায়গায, যেখানে গাড়ির ভিড় বেশি হয়, সেখানে পুলিশের সঙ্গে প্রচার চালাবেন এই দুই টাউনশিপের আধিকারিক, কর্মীরা। হিডকো সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকে ওই প্রচারাভিযান শুরু হবে। চলবে ১৫ তারিখ পর্যন্ত। প্রচারের মূল বার্তা হতে চলেছে, সিগন্যাল লাল থাকার সময় সব গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ রাখা। এতে যেমন জ্বালানিরও সাশ্রয় হবে, নিয়ন্ত্রণে আসবে দূষণ।
কোভিড আবহে আদালতের নির্দেশে বায়ুদূষণ রুখতে এবার কালীপুজোয় বাজি কম পুড়েছে। ফলে দূষণের মাত্রাও অনেক কম। তবে বায়ুদূষণের অন্যতম বড় উৎস ধরা হয় পরিবহণ ক্ষেত্রকে। গাড়ির ধোঁয়া থেকে দূষণ ছড়ায়। দেখা যায়, অনেক সময় সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকলেও অনেক গাড়িচালক ইঞ্জিন বন্ধ করেন না। সেটি চালিয়ে রাখেন। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ওই সামান্য সময় গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ থাকলে দূষণ অনেকটাই কমানো যায়। আর এই উদ্যোগ যে কেউ চাইলে বাস্তবায়িত করতে পারেন। এর জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করতে হবে না। দরকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাহায্যে এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
হিডকো সূত্রে জানা গিয়েছে, প্ল্যাকার্ড-ব্যানার হাতে স্বেচ্ছাসেবকরা গাড়িচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। কোনও সিগন্যালের সামনে যখন কোনও গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকবে, তাঁদের ওই প্ল্যাকার্ড দেখানো হবে। যেখানে বার্তা থাকেব, ‘গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ রাখুন।’ এখন তাঁরা গাড়িচালকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। কারণ, করোনা সংক্রমণের জন্য বেশিরভাগ গাড়ির কাচ তোলা থাকে। তাই তাঁরা প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে ইঞ্জিন বন্ধ রাখার বার্তা দেবেন। নিউটাউন এবং নবদিগন্তের পাঁচটি জায়গায় তা চলবে। কলেজ মোড়, টেকনোপলিস মোড়, নারকেলবাগান মোড়, ইকোপার্ক এবং সিটি সেন্টার-২। সেখানে গাড়ির চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। ফলে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া যাবে। সবাই যদি এটা মেনে চলে, তা হলে দূষণ অনেকটাই কমানো যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.