ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রায় তিন দশক আগে তৈরি বাড়ি। বাড়ির পাশেই সড়কপথের কয়েকদফা সংস্কারের কাজের পর রাস্তার উচ্চতাও বেড়েছে। তাই বৃষ্টি হলেই ওই পুরানো আমলের বাড়ির নিচের তলার ঘরের ভিতরে পর্যন্ত জল ঢুকে যায়। জলবন্দি হয়ে থাকার কঠিন যন্ত্রণা হাড়েহাড়ে টের পান পরিবারের সদস্যরা। তাহলে উপায়? বাড়ির মেঝে তো আর উঁচু করা সম্ভব কি? এই প্রযুক্তির যুগে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।
প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কেতুগ্রামে আস্ত তিনতলা একটি বাড়িটাকে জ্যাক দিয়ে উপরে তোলা হচ্ছে। গৃহস্থবাড়ির সদস্যরা দিব্যি রয়েছেন বাড়ির মধ্যেই। বাড়ি খালি করার প্রয়োজন হয়নি। তলে তলে উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে ওই বাড়ির। এই কৌশল দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরাও।
কেতুগ্রাম ১ ব্লকের কোমরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কাটোয়া-বোলপুর সড়কপথের ধারেই বাড়ি প্রফুল্ল সাহাদের। স্ত্রী পূর্ণিমাদেবী ও এক মেয়ে পৌলমীকে নিয়ে প্রফুল্লবাবুর সংসার। প্রায় ৩০ বছর আগে তৈরি হয়েছিস তাদের বাড়িটি। বাড়ির নিচেরতলায় প্রফুল্লবাবুর দর্জি ও কাপড়ের দোকান রয়েছে৷ আশপাশে রয়েছে আরও একাধিক ঘরবাড়ি। প্রফুল্লবাবু জানান, পাড়ায় রয়েছে নিকাশি সমস্যা। বৃষ্টি হলেই তাঁর বাড়ির নীচের অংশে জল ঢুকে যায়। জলজমার হাত থেকে কিছুতেই রেহাই মিলছিল না। শেষমেশ হরিয়ানার এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার খোঁজ পান তিনি। ওই সংস্থাই এখন প্রযুক্তির সাহায্যে মুসকিল আসান করছে। প্রফুল্লবাবুদের বাড়ির প্রয়োজনমত উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে জ্যাক দিয়ে।
জ্যাক দিয়ে বাড়ি উঁচু করার কাজ রাজ্যে বেশ কয়েক জায়গায় ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে। তবে গ্রামেগঞ্জে এমন সচরাচর দেখা যায় নি। স্বভাবতই গ্রাম এলাকার লোকজন তা দেখতে ভিড় করছেন। প্রফুল্লবাবু জানান, সাড়ে তিনলক্ষ টাকা চুক্তি হয়েছে ওই সংস্থার সঙ্গে। বাড়ির চারদিকেই ৯০ টি জ্যাক লাগিয়ে মাত্র ছ’-সাত জন কর্মী কাজ করছেন। ২২ দিনের মধ্যে বাড়িটি উঁচু করার কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে কথা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.