সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাগুর, কই, শিঙির মত জিয়ল মাছ জল ছেড়ে ডাঙায় আসার পরও কিছুক্ষণ প্রাণে বাঁচতে সক্ষম হয়। তেমনই এক প্রজাতির মাছ সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার একদল সমুদ্রবিজ্ঞানীকে অবাক করছে। তা নিয়ে আরও গবেষণায় উৎসাহিত করেছে। তবে একে জিয়ল মাছের প্রজাতিতে ফেলা যাবে না একেবারেই। প্রথমত, সাপের মতো দেখতে এই মাছ জল ও ডাঙা – দুই জগতেই দীর্ঘক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, প্রাণীটি অন্যান্য জলজ জীবের বিপদের অন্যতম কারণ। আর সেটাই গবেষকদের অনুসন্ধানের মূল বিষয় – কীভাবে সে এমন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
জর্জিয়ার প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণ বিভাগের একদল বিজ্ঞানীর চোখে সম্প্রতিই ধরা পড়েছে এই বিশেষ মৎস্য। একটি পুকুর থেকে পাওয়া মাছের আকার-আকৃতি দেখেই কিছুটা চমকে গিয়েছেন তাঁরা। সামনে দিকটা একেবারে সাপের মতো। গায়ে সেরকমই ছোপ। মুখের কাছটাও অনেকটা তার মতো। তাই একে ‘স্নেকহেড ফিশ’ বলা হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে প্রথম ক্যালিফোর্নিয়ার সান বার্নাডিনোর সিলভারহুড লেকে ধরা পড়ে এই সর্পাকৃতি মাছ। সেসময় জানা গিয়েছিল যে মাছটি আসলে পূর্ব এশিয়ার। তখন ক্যালিফোর্নিয়া-সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি প্রদেশে এই মাছ পাওয়া যেত রেস্তরাঁয়, খাবার হিসেবে। ২০০২ সাল নাগাদ বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে এই মাছ যতই সুস্বাদু হোক, তার বিপদ কম নয়। তখনই তড়িঘড়ি করে স্নেকহেড ফিশ ধরা, বিক্রি – সব বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়।
সম্প্রতি মেরিল্যান্ড প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় জানতে পেরেছেন, এর শ্বাসতন্ত্র এমনভাবেই তৈরি যে খোলা হাওয়া থেকে দিব্যি মানুষের মতো শ্বাস নিতে পারে। ফলে জল থেকে ডাঙায় তুললেও জীবনধারণে কোনও সমস্যা হয় না এই স্নেকহেড মাছের। তবে আচমকা পরিবেশ বদলের ফলে কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে।জলাশয়ের অন্যান্য প্রাণী, ছোট মাছ এমনকী ছোট ইঁদুরও এর খাদ্যতালিকায় রয়েছে। আর এই কারণেই অন্যান্য জলজ প্রাণীর কাছে এটি বিপদের কারণ। লম্বায় তিন ফুটের কাছাকাছি মাছটি প্রায় ১৮ পাউন্ড ওজনের হয়। সেইসঙ্গে রয়েছে ধারালো দাঁত। যার সাহায্যে শিকারে কোনও সমস্যা হয় না।
সাম্প্রতিক গবেষণায় এসব দেখে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া মৎস্যজীবীদের সতর্ক করেছেন। কীভাবে এই রাক্ষুসে মাছ দেখে চিনতে পারবেন, সে সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। তবে এসব ছাপিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিস্ময়ের এই যে জল ছাড়াও বেঁচে থাকতে পারে মৎস্য প্রজাতির কোনও এক সদস্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.