সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কল্পবিজ্ঞানের গল্পে ইটি-র অস্তিত্ব তাহলে একেবারে আজগুবি নয়৷ কারণ, এই প্রথম পৃথিবীর বাইরেও কোথাও প্রাণের সন্ধান মিলতে পারে বলে স্বীকার করে নিল আমেরিকার ন্যাশনাল এরোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা NASA৷ নাসার ইঙ্গিত, শনি বা বৃহস্পতির উপগ্রহে থাকতে পারে কোনও প্রাণী৷ বহুদিন ধরেই বিশ্বের মানুষ ভিন গ্রহে কোথাও মানুষের মতোই প্রাণী রয়েছে কি না, জানতে উৎসুক৷ এমনকী, অত্যুৎসাহীরা তো মাঝেমধ্যেই দুনিয়ার নানা প্রান্তে ভিন গ্রহের প্রাণী দেখতেও পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন৷
এবার ওই সব দাবিকেই কি মান্যতা দিল নাসা? কারণ, নাসা সূত্রে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, বৃহস্পতির উপগ্রহ Enceladus-এ জলের সন্ধান মিলেছে৷ বরফের চাঁইয়ের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারে আস্ত সমুদ্র৷ নাসার অনুসন্ধানে সেই তথ্যই মিলেছে৷ জানা গিয়েছে, শনির উপগ্রহেও ৯৮% জল ও ২% হায়ড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড ও মিথেনের মতো গ্যাস মিলেছে৷ এই সব চিহ্ন দেখেই গবেষকরা ওই সব উপগ্রহে প্রাণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন৷
নাসা জানাচ্ছে, পৃথিবীতে যত সমুদ্র আর মহাসাগর রয়েছে, তার চেয়ে বহুগুণ গুণ বেশি সমুদ্র আর মহাসাগরে ভেসে যাচ্ছে বৃহস্পতি ও শনির উপগ্রহে। আশার কথা, ওই জল তরল অবস্থায় রয়েছে। পৃথিবীর গভীরতম প্রশান্ত মহাসাগরের চেয়েও অন্তত ১০০ গুণ বেশি গভীর মহাসাগর রয়েছে বৃহস্পতির উপগ্রহে৷ সুবিশাল সমুদ্র আর মহাসাগরে রয়েছে বৃহস্পতির আর একটি উপগ্রহতেও। এত জল পৃথিবীতে কোথাও নেই। আর সেই তরল জলের মহাসাগরগুলি ঢাকা রয়েছে পুরু বরফের চাদরে।
বিশাল বিশাল সমুদ্র আর মহাসাগরে ভেসে যাচ্ছে শনির দুই উপগ্রহও৷। তবে সেই মহাসাগরগুলি ভাসছে তরল হাইড্রোকার্বনে। মিথেন ও ইথেনের সাগর, মহাসাগর। নাসা জানিয়েছে, ওই উপগ্রহগুলিতে পুরু বরফের চাদরের তলায় লুকিয়ে থাকা তরল জলের মহাসাগরগুলোর একেবারে নীচে প্রচণ্ড তাপে জল বাস্পীভূত হয়ে ধোঁয়ার মতো উপরে উঠে আসছে। কোনও সমুদ্রের তলায় প্রাণ না থাকলে বা কোনও জৈবিক ক্রিয়া না ঘটলে এটা সম্ভব হত না। শুধু তাই নয় এও দেখা গিয়েছে, ওই মহাসাগরগুলির তলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড ও মিথেন গ্যাস। এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে, বেঁচে থাকার জন্যে ওই গ্যাসগুলি থেকেই রসদ জোগাড় করছে জলজ প্রাণ।
নাসার বৈজ্ঞানিক লিন্ডা স্পিক্লারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, প্রাণের অস্তিস্ব থাকতে যে রাসায়নিক এনার্জির দরকার হয়, শনির ছোট উপগ্রহে সেই ইঙ্গিত মেলায় প্রাণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার৷ Enceladus যথেষ্ট ছোট আকৃতির৷ পৃথিবীর চাঁদের চেয়ে মাত্র ১৫% বড়৷ পৃথিবীর সঙ্গে দূরত্বের নিরিখে মঙ্গল ছাড়াও বৃহস্পতি ও শনির উপগ্রহেই প্রাণের উপস্থিতির সম্ভাবনা সবচেয়ে উজ্জ্বল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.