Advertisement
Advertisement
Groundwater Extraction

ভূগর্ভের জল তোলায় হেলে পড়ছে পৃথিবী, বড় বিপদের আশঙ্কায় গবেষকরা!

বদল ঘটেছে পৃথিবীর ভর বণ্টনেও।

The earth is tilted due to groundwater extraction
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:November 26, 2024 7:02 pm
  • Updated:November 26, 2024 7:02 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীবাসীকে জলের যোগান দিতে গিয়ে কাত হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর অক্ষরেখা। মেরু বা ‘অ‌্যাক্সিস’ও বলা যায়। এই অক্ষরেখাকে কেন্দ্র করেই ঘোরে পৃথিবী। আর সেটাই বেঁকে গিয়েছে এক পাশে। আরও স্পষ্ট করে বললে প্রায় ৩১.৫ ইঞ্চি।

সোল ন‌্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক কি-উইয়ন সেও-র নেতৃত্বাধীন বিজ্ঞানীদের দল জানিয়েছে, ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর মেরু তথা অক্ষরেখা তার পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে অন্তত ৮০ সেন্টিমিটার সরে গিয়েছে। আর এর পুরোটাই হয়েছে নির্বিচারে ভূ-গর্ভস্থ জল নিষ্কাশনের জেরে। যার মূলে রয়েছে মানুষ। এবং বিশেষ করে ভারতীয়রা। এঁদের জলের যোগান দিতে দিতেই এভাবে প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর কাঠামোগত গঠনে। হ্যাঁ, গবেষকরা জানিয়েছেন, মূলত উত্তর আমেরিকা এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের অধিবাসীরা যেভাবে যথেচ্ছভাবে অ‌্যাকুইফার-সহ যাবতীয় ভূ-গর্ভস্থ কাঠামো থেকে জল নিষ্কাশন করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন–তারই মাশুল গুনতে হচ্ছে পৃথিবীকে। চাপ বাড়তে বাড়তে অক্ষরেখাটি প্রকৃত অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে গিয়েছে।

Advertisement

বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, এর পরিমাণ হল প্রতি বছর প্রায় ৪.৩৬ সেন্টিমিটার। গবেষণার এই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে জিওফিজিক‌্যাল রিসার্চ লেটার্সে। জানা গিয়েছে, যে সময় ধরে এই গবেষণা চলেছে অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মেয়াদে, পৃথিবীর অভ‌্যন্তর থেকে অন্তত ২,১৫০ গিগাটন ভৌমজল তুলে নিয়েছে মানুষ। এর জেরে শুধু যে পৃথিবীর অক্ষরেখাই কাত হয়ে যায়নি, প্রভাব পড়েছে সমুদ্রের জলতলের উত্থানেও। অঙ্কের হিসাবে প্রায় ০.২৪ ইঞ্চি। একইসঙ্গে বদল ঘটেছে পৃথিবীর ভর বণ্টনেও। আগে মনে করা হত, জলবায়ু বদলের কুপ্রভাব এবং বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরেই দ্রুত হারে গলছে আন্টার্কটিকার হিমবাহ। কিন্তু এই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, এর পিছনে পৃথিবীর ভৌমজলের এই নির্বিচারে নিষ্কাশনও সমানভাবে দায়ী। যদিও এখনও পর্যন্ত সে অর্থে বড়সড় কোনও প্রভাব মানুষের এই ‘অবেবিচক’ পদক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তন বা ঋতুবৈচিত্রের উপর ফেলতে পারেনি।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সতর্ক করা সত্ত্বেও যদি এইভাবে ভৌমজল নিষ্কাশন অবাধে চলতে থাকে, তবে অদূর ভবিষ‌্যতে এই নিয়ে চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই চাঞ্চল‌্যকর ফলাফল পরিবেশবিদ এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের ‘ঘুম ভাঙানোর’ জন‌্য যথেষ্ট। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে এই অবাধ ভৌমজল আহরণের প্রথায় যাতে রাশ টানা যায়, তার দিকেই নজর দেওয়া এখন সবচেয়ে জরুরি। যদিও এত বড় পদক্ষেপ কোনও একক দেশের পক্ষে নেওয়া সম্ভব হবে না বলেও হুঁশিয়ার করছেন তাঁরা। গোটা বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে, পরস্পরের পাশে দাঁড়িয়ে আলোচনায় সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে এই ভয়ংকর সমস‌্যার সমাধানসূত্র বের করার জন‌্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement