ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে করোনার প্রকোপের মধ্যে আরও এক দুঃসংবাদ। ফাটল দেখা দিল ভারত মহাসাগরের তলদেশের মহাদেশীয় পাতে। সম্প্রতি জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স নামের জার্নালে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্যারিসের ইনস্টিটিউট অফ আর্থ ফিজিক্সের গবেষকদের তরফে প্রকাশিত এই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ক্রমশই ভেঙে দু’টুকরো হয়ে যাচ্ছে এই ক্যাপ্রিকর্ন টেকটনিক প্লেট। একটি বিজ্ঞান সম্পর্কিত ওয়েবসাইটেও এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানও বলা হয়েছে, বিশাল এই মহাদেশীয় পাতে চিড় ধরেছে।
ভারত মহাসাগরের তলদেশের এই ক্যাপ্রিকর্ন টেকটনিক পাত অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যেবর্তী স্থানে রয়েছে। প্রতি বছর ০.০৬ থেকে ১.৭ মিলিমিটার করে দূরে সরছে এই পাত। আর পাতের এই গতিবেগই ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, এভাবে পাত যদি সরতে থাকে তবে ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর কোনও ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এমনকী মারাত্মক কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তাঁরা। এমন প্রাকৃতিক ঘটনার একটি কারণও খুঁজে বের করেছেন ভূবিজ্ঞানীরা। জানিয়েছেন, ২০১২ সালে ভারত মহাসাগরের তলদেশে দু’টি বড়সড় ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে প্রথম ভূমিকম্পের কম্পনের মাত্রা ছিল ৮.৬ এবং দ্বিতীয়টির কম্পনের মাত্রা ছিল ৮.২। ইন্দোনেশিয়ার উপকূলের কাছাকাছি হয়েছিল এই ভয়াবহ ভূমিকম্প। ভারত-অস্ট্রেলিয়া ক্যাপ্রিকর্ন টেকটনিক প্লেট বরাবর হোয়ারটন বেসিনে হয়েছিল এই দুই জোরালো ভূমিকম্প। আর তার জেরেই পাতের মধ্যে চিড় ধরেছে বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে ভারত মহাসাগরের অনেক নিচে ঘটছে এই পরিবর্তন। ফলে সব সময় নজরে রাখা সম্ভবও হচ্ছে না বিজ্ঞানীদের পক্ষে। আর তাছাড়া এত ধীরে এই টেকটনিক প্লেট ভাঙছে যে অনেকসময় সেটি বোঝাও যাচ্ছে না। যদিও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে গতিতে এই প্লেটের মধ্যে ফাটল ধরছে তাতে এক মাইল দূরত্ব যেতে এর সময় লাগবে ১০ লক্ষ বছর। কিন্তু তাই বলে আগামী বছরগুলিতে প্রবল ভূমিকম্পের আশঙ্কা নেই এমন নয়। কারণ এই মহাদেশীয় পাতের অল্প পরিবর্তেরই ভূপৃষ্টে ভয়ংকর পরিবর্তনের সৃষ্টি হয়। আর এই দুর্যোগ সম্পর্কে আগাম জানাও সম্ভব নয়। তাই এখন চেষ্টা চালানো ছাড়া গতি নেই। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন যতটা সম্ভব মহাদেশীয় এই পাতের পরিস্থিতি উপর নজর রাখতে। বাকিটা ভবিষ্যতের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.