সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সীমিত পরিকাঠামো নিয়েও মহাকাশ গবেষণায় উন্নত দেশগুলিকে সমানে পাল্লা দিয়ে চলেছে ভারত। এ দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো (ISRO)র বিজ্ঞানীদের মেধা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিই উপর ভর করে একের পর এক অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। মাস দুই আগে প্রতিবেশী গ্রহ শুক্রে ফসফিন যৌগের অস্তিত্ব পেয়ে সেখানে প্রাণের সন্ধানে আগেভাগেই শুক্রযান-১ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ইসরো। এবার সেই কাজে ইসরোর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল সুইডেন (Sweeden)। শুক্রযান-১ অভিযানে অত্যাধুনিক একটি যন্ত্র ভারতের হাতে তুলে দেবে সুইডিশ ইনস্টিটিউট অফ স্পেস ফিজিক্স। এর মাধ্যমে শুক্রের উপর সৌর বিকিরণের প্রভাব বোঝা যাবে। এমনই ঘোষণা করেছেন ভারতে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ক্লাস মলিন।
হাওয়াই ও চিলিতে বসানো টেলিস্কোপের তথ্য থেকে শুকতারার মেঘের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা সেখানে ফসফিন (Phosphine) যৌগটির সন্ধান পেয়েছেন, যা গ্যাস আকারে পৃথিবীতেও পাওয়া যায়। আর তাতেই প্রাণ সঞ্চারের আশা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখানে কোনও অণুজীব বেঁচে থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু হাইড্রোজেন আর ফরফরাসের রাসায়িক বিক্রিয়ায় ফসফিন সমৃদ্ধ মেঘ কীভাবে শুক্রের চারপাশে তৈরি হল, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনও ধারণা করতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই শুক্রযান-১ পাঠানোর পরিকল্পনা ইসরোর।
এই খবর পেয়ে তৎপর সুইডেনও। ভারতের ISRO এবং সুইডেনের IRF হাতে হাত রেখে অভিযানে শামিল হবে। রাষ্ট্রদূত ক্লাস মলিন জানিয়েছেন, IRF ‘এর এই উদ্যোগ মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারত-সুইডেনের দ্বিতীয় যৌথ কাজ হবে। কিন্তু ইসরোর শুক্র অভিযানে সুইডেনের ভূমিকা কী? তাও বিশদে জানিয়েছেন মলিন। তাঁর কথায়, “IRF’র একটি যন্ত্র, ভেনাশিয়ান নিউট্রালস অ্যানাইলাইজার (VNA) এক্ষেত্রে তুলে দেওয়া হবে ভারতের হাতে। এর মধ্যে দিয়ে সূর্য এবং সৌর বিকিরণের কী প্রভাব শুক্রের উপর পড়ছে, তা বোঝা যাবে। সৌরপৃষ্ঠ থেকে বিচ্ছুরিত আয়ন এবং তাপপ্রবাহের প্রকৃতি বিশ্লেষেণ করতে পারবে এই যন্ত্র। মলিন জানিয়েছেন, ভারত মহাকাশ গবেষণা যেভাবে উৎসাহী, তাতে দু’দেশের মধ্যে এই ক্ষেত্রে আদানপ্রদান চলতেই পারে। সুইডেনের মহাকাশ প্রযুক্তি বেশ উন্নত, দাবি করে মলিনের প্রস্তাব, প্রযুক্তি দিয়েই তাঁরা ইসরোকে সাহায্য করতে পারে।
আসলে, মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (FDI) রাস্তা খুলে দিয়েছে বর্তমান মোদি সরকার। তাতেই এ ধরনের অভিযানে অন্যান্য দেশের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদানকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সুইডেনের প্রস্তাবের পর ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের শুক্র অভিযানে ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া সুইডেন সকলেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসরোর পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ২০ টি এ ধরনের প্রস্তাবকে নির্বাচন করা হয়েছে। অন্তিমত শুক্রযান-১’এ কার কার সাহায্য নেওয়া হবে, তা চূড়ান্ত হবে পরবর্তীতে। ২০২৩এর মধ্যে শুক্রযান-১ পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ইসরো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.