সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি সপ্তাহেই ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালের প্রতিবেদন আশা জাগিয়েছিল, প্রতিবেশী গ্রহ শুক্রেও থাকতে পারে প্রাণের অস্তিত্ব, কোনও অণুজীব। চাঞ্চল্যকর সেই তথ্য জেনে হাত গুটিয়ে বসে থাকা তো দূর অস্ত, চিন্তাভাবনার জন্যেও মোটেই বিশেষ সময় নেননি ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা (Space science news in Bengali)। ইসরো জানিয়েছে, আগামী তিন বছরের মধ্যেই তারা প্রস্তুত করছে শুক্রযান-১’কে। পাঠানো হবে শুকতারার কক্ষপথে। বুধবার এই ঘোষণা করেছেন ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন।
সম্প্রতি হাওয়াই ও চিলিতে বসানো টেলিস্কোপের তথ্য থেকে শুকতারার মেঘের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা সেখানে ফসফিন (Phsophine) যৌগটির সন্ধান পেয়েছেন, যা গ্যাস আকারে পৃথিবীতেও পাওয়া যায়। আর তাতেই প্রাণ সঞ্চারের আশা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখানে কোনও অণুজীব বেঁচে থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু হাইড্রোজেন আর ফরফরাসের রাসায়িক বিক্রিয়ায় ফসফিন সমৃদ্ধ মেঘ কীভাবে শুক্রের চারপাশে তৈরি হল, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনও ধারণা করতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। তাঁদের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পেতে অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠছে শুকতারা অভিযান। আর এতে অনেকের চেয়ে একধাপ এগিয়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র।
বুধবার ইসরোর (ISRO) চেয়ারম্যান কে শিবন জানিয়েছেন, ২০২৩ সাল নাগাদ শুক্রের কক্ষপথে পাঠানো হবে শুক্রযান-১ (Shukrayaan-1)। সেখানে পৌঁছে যানটি বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে তথ্য পাঠাবে ইসরোর কন্ট্রোলরুমে। তা থেকে শুধু মেঘই নয়, শুকতারার সামগ্রিক বায়ুমণ্ডলের একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে। প্রাণধারণের সম্ভাবনা নিয়ে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মনে করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
আসলে, ইসরোর শুক্রযান-১-এর পরিকল্পনা একেবারেই যে নতুন, তা কিন্তু নয়। চলতি বছরের প্রথমদিকে ইসরো চেয়ারম্যান শুক্র অভিযানের একটা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালে শুকতারার মেঘ নিয়ে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি সেই উদ্যোগকে কয়েকগুণ ত্বরান্বিত করে তুলল। শুরু হয়ে গেল শুক্রযান-১-এর চূড়ান্ত প্রস্তুতি এবং তা পাঠানোর দিনক্ষণ।
ভারতের পাশাপাশি শুকতারা অভিযানে বিশেষ আগ্রহী নিউজিল্যান্ডও। সেখানকার একটি বেসরকারি সংস্থার তরফে একগুচ্ছ কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো হচ্ছে মহাকাশে। তার মধ্যে একটি ছোট উপগ্রহ শুক্রেও পাঠানো হবে সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য। ফলে ভোরের শুকতারায় সত্যিই প্রাণের স্পন্দন রয়েছে কি না, তা জানতে এখনও বেশ কিছুটা সময়ের অপেক্ষা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.