সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একে মহামারিতে রক্ষে নেই, আমফান দোসর। জোড়া ফলা বাংলার বুকে বড়সড় ক্ষতচিহ্ন রেখে গিয়েছে। আমফান তাণ্ডবের সপ্তাহ পেরলেও, এখনও চলছে পুনর্নির্মাণের কাজ। একসঙ্গে অনেকে মিলে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা। আর তা দূর করতে এগিয়ে এল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ সংস্থা ‘শের’ (SHER)। করোনা যুদ্ধে বর্ম হিসেবে অতি প্রয়োজনীয় ফেস শিল্ড তারা তুলে দিল আমফান বিধ্বস্ত এলাকার বনকর্মী ও অন্যান্য কর্মীদের হাতে।
আমফানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া বহু গ্রাম। সেখানে বনকর্মী ছাড়াও অন্যান্য উদ্ধারকারীরা এলাকা পরিষ্কার থেকে শুরু করে বাঁধ মেরামতি, গৃহহীনদের আশ্রয় শিবিরের ব্যবস্থা – সবই একযোগে করছেন। আর এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ আমফান তাণ্ডব চালিয়েছে বলে করোনা আতঙ্ক তো দূরে সরে যায়নি। এক জায়গায় অনেকের জমায়েত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ঠিক এই আশঙ্কাটাই হয়েছিল আমফান পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরগুলিতে। এত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন যে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধিটুকু মানাও সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে সেখান থেকে COVID-19 সংক্রমণ বৃদ্ধির চিন্তা ছিল প্রশাসনিক কর্তাদেরও।
কিন্তু এই সময়ে এমনই পরিস্থিতিতে সকলকে কাজ করতে হচ্ছে। আমফানের পরেই সুন্দরবনের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ত্রাণের কাজে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ সংস্থা ‘শের’। ত্রিপল, খাবার, পানীয় জল ছাড়াও তাঁরা দুর্গতদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন সুস্থ থাকার প্রাথমিক কিছু সামগ্রী, যেমন – সাবান, ওআরএস, অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ। এবার উদ্ধারকারী দলের জন্যও ব্যবস্থা করে দিলেন তাঁরা। যথাযথ সুরক্ষার সঙ্গে কাজ করার উপায় হিসেবে তাঁরা ফেস শিল্ড দিলেন ওইসব দুর্গত এলাকার উদ্ধারকারীদের জন্য।
বৃহস্পতিবার ‘শের’-এর সদস্যরা বসিরহাট, বিদ্যা বনাঞ্চল এবং সজনেখালি অভয়ারণ্যের বনকর্মীদের ৩০০টি ফেস শিল্ড তুলে দিলেন। ছিলেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তথা সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ কুণ্ডু, মুখ্য উপদেষ্টা অরিন্দম শীল, অনারারি ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সুচন্দ্রা কুণ্ডু সকলেই। বিপদের সময়ে করোনা যুদ্ধে এমন একটা অস্ত্র পেয়ে খুশি তাঁরা প্রত্যেকেই। শুধু বন্যপ্রাণ সংরক্ষণই নয়, ‘শের’ যে বন্যপ্রাণ রক্ষাকারীদেরও পাশে রয়েছে, ফেস শিল্ড দিয়ে সেটাই বুঝিয়ে দিল সংস্থা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.