অভিরূপ দাস: লঙ্কায় আম খেয়ে আঁটি ছুড়ে এ দেশে ফেলেছিল হনুমান। পৌরাণিক সে কাহিনী সকলেরই জানা। তাদের উত্তরপুরুষদের জন্য তেমন সুযোগ নিয়ে এল নিউটাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটি (NKDA)।
যত ইচ্ছে ফল খান। তারপর রোদে শুকিয়ে নিন বীজ। ছুঁড়ে মারতে হবে নিউটাউনের নতুন বীজ বিছানায়। দিন কয়েক পরে মাটিতে সে বীজ পরে জন্ম নেবে নানান গাছ। তৈরি হবে আস্ত একটা বাগান। আম, কাঠাল, কিম্বা লিচুর। রবিবার নিউটাউনে উদ্বোধন হল অভিনব দুই বাগানের। সেখানেই রয়েছে বীজ বিছানা বা বেডস অফ সীড (Beds of Seeds)।
এ’দিন অভিনব যে দু’টি উদ্যানের দরজা খুলল তার একটি ১৪ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে পোষণ পার্ক বা পুষ্টি উদ্যান। অন্যটি ১৫ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে পঞ্চবটি বন। তুঙ্গভদ্রা নদীর তীরে রামায়ণের সেই পৌরাণিক জঙ্গল কলকাতায় আনার নেপথ্যে নিউটাউন কলকাতা কেয়ার ফাউন্ডেশন। আয়ুর্বেদ চিকিৎসক অচিন্ত্য মিত্র জানিয়েছেন, ভেষজ বাগানের বেড়া দেওয়া হয়েছে বাসক গাছ দিয়ে। ভিতরে পঞ্চবটির বট, অশ্বথ, অশোক, বেল, আমলকি তো রয়েছেই। ঠায় দন্ডায়মান কৎবেল, হরিতকি, বহেরা, অমলতাস, পুঁদিনা, ফিভারভিউ।
সকলের জন্য খোলা থাকবে এই ভেষজ উদ্যান। একপাক হেঁটে এলেই শরীর মন তরতাজা। অশ্বগন্ধা গাছ নিদ্রা বৃদ্ধি করে, হৃদযন্ত্রের কাজ ঠিক রাখে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা বলছেন, নীমের মতো গাছের ছায়াও উপকার। ভেষজ গাছের একাধিক গুণাগুণ। রোজকার রোগবালাইকে দূরে রাখে আমলকি, হরতকি, নিম। উদ্যান গড়ার কারিগরদের কথায়, কোনটা কোন গাছ? সেই ভেষজ গাছ গাছড়ার কী কাজ? তা লেখা থাকবে প্রতিটি গাছের পাশে। সাধারণ মানুষ সচেতন হবেন। পোষণ পার্কে রয়েছে এক হাজার চারশো ফলের গাছ। পাঁচশো আম গাছ, দু’শো পেয়ারা গাছ, পঞ্চাশটি কাঠাল গাছ, গন্ধরাজ, পাতিলেবু, বাতাবি লেবু মিলিয়ে দেড়শো লেবু গাছ।
রবিবার উদ্যানদুটির উদ্বোধনে হাজির ছিলেন, আয়ুর্বেদ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডিরেক্টর ডা. পিভি ভি প্রসাদ, ওয়েস্টবেঙ্গল পাওয়ার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশ লিমিটেডের আধিকারিক অনিমেষ কুমার। উদ্যানে ঢুকে চাইলে ফলও খেতেন পারেন যে কেউ। পঁচিশ শতাংশ ফল গাছেই রেখে দেবার পরিকল্পনা করেছেন কর্মকর্তারা। তাঁদের কথায়, পাখি হোক বা মানুষ, ফল খাবে। মাটিতে তার বীজ পরবে। আবার সেখান থেকে গাছ হবে। এটাই তো চাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.