ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার প্রতিষেধক বের করতে গবেষক, বিজ্ঞানীদের কাজের অন্ত নেই। ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের ছুটিও নেই। নাওয়াখাওয়া ভুলে সকলে ব্যস্ত মারণ জীবাণু বাগে আনার অস্ত্র তৈরিতে। সেই যুদ্ধেই একপ্রস্থ সাফল্য দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনার ইনস্টিটিউট, যেখানে এই প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলছে, সেখানকার গবেষকদের দাবি, ৬ টি বাঁদরের উপর তাঁদের নতুন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। এরা সকলেই SARS CoV2 অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত ছিল। ওষুধটি তাদের শরীরে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করেনি। যদিও তাদের প্রত্যেকেরই উচ্চমাত্রায় শ্বাসকষ্ট ছিল।
আর এই ফলাফল দেখেই বিজ্ঞানীরা বেশ আশাবাদী। এমনিতেও অক্সফোর্ডের এই প্রতিষেধকের Human trial বা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। ১০০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই কাজে এগিয়ে এসেছেন। লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মহামারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক স্টিফেন ইভানস বলছেন, ”আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হল যে আমরা ভাইরাল ইনফেকশন এবং নিউমোনিয়া – এই দুটি ব্যধি ঠেকাতে পারে এমন মিশ্রিত একটি ওষুধ প্রয়োগ করেছিলাম। প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে, তা কাজ নাও করতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। অর্থাৎ, প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে প্রতিষেধকের তেমন সম্পর্ক নেই। এটা বেশি কার্যকরী হতে পারবে বলে ধারণা।” বাঁদরদের শরীরে ওষুধটির এই ফলাফল বেশ আশা জাগিয়েছে।
এই রোগের প্রতিষেধকের কার্যকারিতা মূলত অ্যান্টিবডি নির্ভরশীল। যে কারণে দেখা যাচ্ছে, অনেকে ২০০৩সালে মহামারির আকার নেওয়া সার্স ( SARS CoV) থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও নতুন নোভেল করোনা ভাইরাসের ধাক্কা সামলাতে পারছেন না। সেখানেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিজ্ঞানীদের। নতুন প্রতিষেধক সেই অ্যান্টিবডি তৈরির কাজ মানবশরীরে কতটা করতে পারবে, তা বুঝতে চলছে গবেষণা। তবে কি বাঁদরদের শরীরে প্রতিষেধকের এই সাফল্যে মানবশরীরেও একইরকম কাজ করবে? না, এবিষয়ে ততটা আত্মবিশ্বাসী এখনই হতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। এ ব্যাপারে তাঁদের সাফ উত্তর, মানবদেহে তা কেমন প্রভাব ফেলছে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই। ততক্ষণে অবশ্য ভ্যাকসিন তৈরির অন্যান্য কাজ এগিয়ে যেতেই পারে।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক সারা গিলবার্টের অধীনে এই গবেষণার কাজ চলছে। গবেষণা শেষ হলে প্রতিষেধক উৎপাদনের জন্য বিশ্বের বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে তাঁরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। এখানেই বাণিজ্যিকভাবে করোনা প্রতিষেধক তৈরির কাজ হবে ভবিষ্যতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.