সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীতে আধুনিক মানুষ তথা হোমো স্যাপিয়েন্স (Homo sapiens) একদিনে আসেনি। নানা প্রজাতি পেরিয়ে বিবর্তনের একের পর এক সিঁড়িতে পা রেখে তবে এই পৃথিবীর বুকে দেখা দিয়েছিল আধুনিক মানুষ। আর এই বিবর্তনের ধাপে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি হল ‘ড্রাগন ম্যান’ (Dragon Man)। আদিম মানবের এই প্রজাতির নাম ‘হোমো লঙ্গি’। এবার গবেষকরা এমন প্রমাণ পেলেন, যা থেকে অনুমান করা হচ্ছে রহস্যময় ডেনিসোভান মানুষরাও তাদেরই প্রজাতির।
২০১০ সালে সাইবেরিয়ার ডেনিসোভা গুহায় সন্ধান মিলেছিল ডেনিসোভানদের। তবে এদের সম্পর্কে বিশেষ কিছুই এখনও জানা যায়নি। কেননা সব মিলিয়ে একটা চোয়ালের অংশ, হাড়ের ছোট ছোট কয়েকটি টুকরো ও দুটি দাঁত ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি ডেনিসোভানদের। তাই রহস্যই থেকে গিয়েছে এদের অস্তিত্বের দিকটি। সম্প্রতি বেজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের গবেষক-অধ্যাপক শিজুন নি জানিয়েছেন, ”আমরা এখন বিশ্বাস করি ডেনিসোভানরাও হোমো লঙ্গি প্রজাতিরই সদস্য। ওদের বড় নাক, মোটা ভুরু ও বড় দাঁত ছিল।”
গত শতাব্দীর তিনের দশকে উত্তর-পূর্ব চিনে মিলেছিল একটি করোটি। কিন্তু মাত্র কয়েক বছর আগেই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পেরেছেন এই করোটি যে মানুষের, সে আজকের হোমো সাপিয়েন্সদের নিকটাত্মীয়। তার নাম দেওয়া হয়েছে হোমো লঙ্গি। বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রায় ১ লক্ষ ৪৬ হাজার বছরের পুরনো ওই করোটি ছিল একজন ৫০ বছরের মানুষের। এতদিন নিয়ান্ডারথাল মানুষদেরই মনে করা হত আধুনিক মানুষদের সবচেয়ে কাছের পূর্বপুরুষ। কিন্তু ক্রমেই এই বিশ্বাসও জোরালো হচ্ছে হোমো লঙ্গিরা অনেক বেশি কাছের। এবং হোমো স্যাপিয়েন্স ও হোমো লঙ্গি একই সঙ্গে এই পৃথিবীতে ছিল হাজার হাজার বছর ধরে। কেবল ছিলই না, আমাদের বিবর্তনেও তাদের বড় ভূমিকা ছিল।
বিজ্ঞানীরা তিব্বত অঞ্চলে স্থানীয় মানুষদের শরীরে ডেনিসোভান জিন আবিষ্কার করেছেন। যা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় এই দুই প্রজাতির মধ্যে মেলামেশা ছিল। আর এই কারণেই অতিরিক্ত উচ্চতাতেই টিকে থাকতে পারে আধুনিক মানুষ। যার পিছনে অবশ্যই রয়েছে হোমো লঙ্গিদের জিনের প্রভাব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.