সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমুদ্রের ৪ হাজার মিটার তলদেশ। অন্ধকারে আচ্ছন্ন এক জগৎ। আর সেখানেই নাকি রয়েছে অক্সিজেন! বিজ্ঞানীরা যাকে ডাকছেন ‘ডার্ক অক্সিজেন’ নামে। ‘নেচার জিওসায়েন্স’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র থেকে জানা যাচ্ছে এমনই তথ্য।
কী এই ‘ডার্ক অক্সিজেন’? প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে, যেখানে সূর্যের আলোর কোনও চিহ্ন নেই সেখানই প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন উৎপন্ন হতে দেখা গিয়েছে। হাওয়াই ও মেক্সিকোর পশ্চিম উপকূলের মাঝামাঝি ওই অঞ্চলের নাম ক্ল্যারিঅন-ক্লিপার্টন জোন তথা সিসিজেড। ৪৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত ওই অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের এক ক্ষেত্র। ফলে সেখানে তাঁদের নজর সব সময়ই থাকে। এবার সেখানেই সন্ধান মিলল ‘ডার্ক অক্সিজেনে’র। এই সংক্রান্ত গবেষণার অন্যতম গবেষক অধ্যাপক লিসা লেভিনের দাবি, এই অক্সিজেন এক অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার।
তবে অপ্রত্যাশিত হলেও রাতারাতি এই আবিষ্কার করেননি বিজ্ঞানীরা। এক দশক আগে গভীর সমুদ্র পরিবেশবিদ অ্যান্ড্রু সুইটম্যান গভীর সমুদ্রে অক্সিজেনের মাত্রা সংক্রান্ত গবেষণা শুরু করেন। আর তার পরই তিনি অবাক হয়ে দেখেন, ওই অন্ধকার সমুদ্রপৃষ্ঠে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটাই বেশি! পরীক্ষা এগোতেই দেখা যায় অক্সিজেন উৎপন্ন তৈরি হচ্ছে সেখানে। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় উঠে আসে, নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া (বিশেষ ধরনের এককোষী অণুজীব) রয়েছে ওই অঞ্চলে। আর তারাই এই ‘ডার্ক অক্সিজেন’ উৎপন্ন করছে। যা অনুসরণ করে সুইটম্য়ান ও তাঁর সঙ্গীরা গবেষণাগারে একই পরিবেশ তৈরি করেন। এবং সেখানকার সমস্ত আদ্যপ্রাণীকে মারকিউরি ক্লোরাইডের সাহায্যে মেরে ফেলেন। দেখা যায়, এর পরও অক্সিজেনের মাত্রা বেড়েই চলেছে।
গবেষকদের ধারণা, ওই অঞ্চলে ০.৯৫ ভোল্ট উৎপন্ন হয়। আর সেটাই সমুদ্রের জলকে বিশ্লিষ্ট করে অক্সিজেন (Oxygen) তৈরি করছে। এই আবিষ্কারকে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এতদিন মনে করা হত পৃথিবীতে অক্সিজেন সূর্যের আলোর উপস্থিতিতেই জল বিশ্লিষ্ট হয়ে উৎপন্ন হয়। কিন্তু নয়া আবিষ্কার এতদিনের ধারণাকে বদলে দিচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.