সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্বেতশুভ্র বরফের উপর যেন রক্তগঙ্গা। আন্টার্কটিকার তুষার চাদরে চাপ চাপ লাল দেখে শিউড়ে উঠেছিলেন নেটিজেনরা। এখানেও কি খুনখারাপি? এই প্রশ্ন মাথায় ঘুরতে ঘুরতেই মিলে গেল উত্তর। বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে বলছেন, স্বাভাবিক ঘটনা। চিন্তার কিছু নেই। কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি মেরু প্রদেশে। তারপরও অবশ্য আন্টার্কটিকার সাদা মাটিতে রক্তরাঙা ছবি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। সবাই খুঁটিয়ে দেখছেন বিরল সেই ছবি।
ইউক্রেনের বিজ্ঞান শিক্ষা দপ্তরের তরফে ছবিটি পোস্ট করা হয়। সেইসঙ্গে লেখা হয় যে হিমাঙ্কের নিচে থাকা আন্টার্কটিকার বুকে এমন দৃশ্য অশুভ লক্ষ্ণণ, যা আবহাওয়া বদলের ইঙ্গিত। এ থেকেই বোঝা যায়, বরফের নিচে জলের পরিমাণ বাড়ছে। ছবিটি দেখামাত্রই অধিকাংশ মানুষজন চমকে উঠেছিলেন। হু হু করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এই ছবি নিয়ে বিস্তর গবেষণার পর ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই লাল রং আসলে একধরনের শ্যাওলা। বছরের একটি বিশেষ সময়ে মেরু প্রদেশে বরফের ভিতরেই এর জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং আয়ুষ্কাল শেষ হলে মৃত্যু। এর কোষে একধরণের রক্তাভ পদার্থ আছে, যার জন্য শ্যাওলার রং কিছুটা লাল।
তবে এবারে এতটা রক্তবর্ণ কেন নজর কাড়ল? এই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যার নেপথ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিশাপই। এখন আন্টার্কটিকায় গ্রীষ্মকাল। সূর্যের প্রখর তাপে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে আলগা হচ্ছে। পাশাপাশি, বরফের স্তরও পাতলা হয়ে যাচ্ছে। তাই এই বিশেষ শ্যাওলা আর অগোচরে থাকছে না। লোকচক্ষুর সামনে এসে পড়েছে। এর উপর আবার বায়ুস্তর অগভীর হওয়ায় সরাসরি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ঠিকরে পড়ছে শ্যাওলার উপর, যা তার রং আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে। অবশ্য বরফ দ্রুত গলে যাওয়ার জন্য সেই নির্দিষ্ট জায়গার শ্যাওলাও মরে যাচ্ছে।
তবে আন্টার্কটিকার এই লালবর্ণ ভূমি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছে। কেউ কেউ লিখছেন, ‘মার্গারিটা পিজ্জার উপর বেসিলের স্তর বলে মনে হচ্ছে।’ কেউ আবার বিজ্ঞান ধরেই এর ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। হদিশ দিয়েছেন লোহিত শ্যাওলার। যা শুধু গ্রীষ্মেই দেখা যায়। বছরের বাকি সময়টা বরফস্তরের নিচে ঘুমিয়ে থাকে। বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা যাইই হোক, দুধসাদা মেরুর বুকে রক্তবর্ণ ছবি যেমন রোমহর্ষক, তেমনই আকর্ষণীয়, বলছেন নেটিজেনদের অধিকাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.