সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উষ্ণায়নের যুগে দাঁড়িয়ে নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে পৃথিবীতে। এবার দক্ষিণ মেরুর আন্টার্কটিকার তাপমাত্রা সেই সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে অনেকটা বাড়িয়ে দিল উদ্বেগ। আপাতভাবে চাঁই চাঁই বরফের স্তূপে ঢেকে থাকা আন্টার্কটিকা মহাদেশের পারদ গিয়ে দাঁড়াল ১৮.৩ ডিগ্রিতে। ১৯৬১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ।
#Antártida | Nuevo récord de temperaturas 🌡️
Este mediodía la Base #Esperanza registró un nuevo récord histórico (desde 1961) de temperatura, con 18,3°C. Con este valor se supera el récord anterior de 17,5°C del 24 en marzo de 2015. Y no fue el único récord… pic.twitter.com/rhKsPFytCb
— SMN Argentina (@SMN_Argentina) February 6, 2020
সুমেরু বা উত্তর মেরুর তুলনায় কুমেরু প্রদেশের বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এখনও পর্যন্ত অনেকটাই নাগালের মধ্যে। সেখানে অনেক যন্ত্রপাতি বসানোর সুযোগ থাকায় প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা প্রায় নিখুঁতভাবেই ধরা পড়ে। সম্প্রতি তাতেই ধরা পড়েছে যে কুমেরুর উত্তরদিকের তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ১৮ ডিগ্রির বেশি। ২০১৭ সালে এই এলাকার উষ্ণতা ছিল ১৭ ডিগ্রি, এবার তাকেও ছাপিয়ে গেল।
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি গলিয়ে দিচ্ছে বরফের পুরু স্তর। বরফগলা জলে উপচে পড়ছে সমুদ্র। পরিবেশবিদরা বলছেন, এই হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে গলনের হার বাড়বে হু হু করে। যা মহাপ্লাবন পর্যন্ত তৈরি করতে পারে। পরিবেশবিদ অর্ক চৌধুরির কথায়, “১৯৯০-৯১ সাল থেকে দক্ষিণ মেরুকে এসব বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছিল। কেউ কানে তোলেনি। কার্বন মনোক্সাইড ও ক্লোরো ফ্লুরো কার্বনের ব্যাপক বৃদ্ধিতেই এই হারে বাড়ছে তাপমাত্রা। আগে হাজার টন বরফ গলত, আর এখন এই গলনের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টন।” সেই ব্যাপক পরিমাণ বরফ গলে যাওয়াতেই শেষের সেদিনের ইঙ্গিত দেখছেন তাঁরা।
মাস দুয়েক আগে নরওয়ের উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রের জল প্রায় গলার কাছে চলে এসেছিল বলে একটি রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। যা দেখে পরিবেশবিদরা হিসেব কষতে শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের ধারণা, আর ২০০-২৫০ বছরের মধ্যে ফিলিপিন্স-সহ সমুদ্রের তীরবর্তী অন্যান্য দেশগুলি ডুবতে শুরু করবে। উষ্ণায়নে জলতল বৃদ্ধিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার।
অর্ক চৌধুরি বলছেন, “আগে নোয়ার নৌকার গল্প আমাদের রূপকথা মনে হত। এখন আর মনে হয় না, এখন আতঙ্ক হয়। এটা উপকথায় পরিণত হয়েছে। নৌকায় ভেসে ভেসে নোয়া নামের কোনও এক মেয়ে সবাইকে উদ্ধার করবে, এইদিনও দেখতে হতে পারে। এই তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে এমন একটা জায়গায় পৌঁছবে, যেখানে সমস্ত বরফ গলে মহাপ্লাবন চাক্ষুষ করতে হবে আমাদের। তারপর আবার পৃথিবী শীতল হতে শুরু করবে। জল জমে বরফের স্তূপে পরিণত হবে। ফিরে আসতে পারে তুষার যুগ। ” সেই দিন হয়ত আর খুব বেশি দূরে নেই। আন্টার্কটিকার রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রার পারায় সেই ইঙ্গিতই স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.