রাজা দাস, বালুরঘাট: মেঘলা আকাশে রোদের ছটা। উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টির মাঝে একটু ভিন্ন ছবি। কিন্তু এ কী! আকাশপানে তাকিয়ে যে অবাক দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরবাসী। একেবারে যেন গ্রহণের দৃশ্য! সূর্য লুকিয়ে পড়েছেন, তার চারপাশে আলোর বলয়। মাঝে একটি আলোর বিন্দু। মনে করিয়ে দিল সেই নয়ের দশকের গোড়ার দিকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে হিরের আংটির কথা।
শনিবার বেলার দিকে গঙ্গারামপুরের আকাশে দেখা গেল বৃহদাকৃতি আলোর বলয়। যা ঘিরে একেবারে শোরগোল পড়ে গেল এলাকায়। সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ছবি। কেউ একে দেখছেন প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা বলে, আবার কেউ দেবদেবীর মাহাত্ম্যের কথা মনে করছে। কেউ আবার বৈজ্ঞানিকভাবে সৌরবলয়ের ব্যাখ্যা খুঁজছেন।
সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ এই বিরল দৃশ্য চোখে পড়ে গঙ্গারামপুরবাসীর। সেখানে হালকা মেঘের মধ্যে দিয়ে উঠা সূর্যর চারদিকে বৃহদাকৃতি আলোর বলয় দৃশ্যমান হয়। মিনিট পনেরো ধরে আকাশে থাকা সেই চিত্র মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় পথচলতি এবং বাড়িতে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে। সেটার ভিডিও এবং স্টিল ছবি মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরে। রাস্তাঘাট তো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়াতেও যে যার মতো ব্যাখ্যা দিয়ে চলেন। কেউ দাবি করেন, এমন দৃশ্যের অর্থ অশনি সংকেত। এবার বৃষ্টিপাত আর হবে না। আবার কারও মতে, ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে চলছে মানবজাতি।
স্থানীয় বাসিন্দা সুমন রায় বলেন, ‘গ্রহণ হলে এমন কিছু বিরল দৃশ্য চোখে পড়ে। কিন্ত এমন কিছুক কথা তো আগাম কোথাও প্রচার হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ হতবাক হয়ে গেছেন এই বিরল দৃশ্য দেখে।’ নানা জনে নানা মত পোষণ করলেও বিষয়টি বিজ্ঞানভিত্তিক বলেই তিনি মনে করেন। সূর্য ঘিরে এই বিরাট রামধনু রঙা আলোর বলয়ের দৃশ্য আকাশে মেঘ ও সূর্যের আলোর মেলবন্ধনেই হয়েছে বলে তাঁর ধারণা। তবে বিষয়টি যাই হোক না কেন, এনিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা ছিল সারাদিন।
তবে এই বলয় তৈরির নেপথ্যে খাঁটি ব্যাখ্যাটি দিয়েছেন বালুরঘাটের বাসিন্দা, ভূগোলের শিক্ষিকা বিউটি দাস। তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে এই ঘটনা দেখা যায়। আকাশে মেঘ থাকে, অথচ বৃষ্টি হচ্ছে না, এই পরিস্থিতিতে জলীয় বাষ্পের উপর সূর্যের আলোর প্রতিফলনে এমন বলয় তৈরি হয়। সবসময় আমাদের দৃষ্টির মধ্যে তা আসে না। মাঝেমধ্যে তা দেখা যায় বলেই এত শোরগোল পড়ছে।’ ব্যাখ্যা যাইই হোক, এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে আপ্লুত গঙ্গারামপুরবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.