সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধু ধু মরুভূমির বুকে ইতিউতি ছড়িয়েছে রয়েছে খেজুরের গাছ, চারপাশে বালিয়াড়ি, তারই মাঝে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে আস্ত একটি হ্রদ। তবে এ কোনও মরুদ্যান নয়, কিছু দিন আগেও এই হ্রদের কোনও চিহ্ন ছিল না। হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া এই ম্যাজিক হ্রদের কারণ নজিরবিহীন বৃষ্টি। প্রবল বৃষ্টির জেরে কার্যত বানভাসি অবস্থা রুক্ষ শুষ্ক সাহারার। রিপোর্ট বলছে, গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে মরোক্কোয়। যার জেরেই এমন বেহাল অবস্থার ছবি ধরা পড়েছে নাসার উপগ্রহ চিত্রে।
মরুভূমি হলেও নিয়ম মেনে মাঝে মধ্যে দু-এক পসলা বৃষ্টি দেখা যায় মরোক্কোতে। মরোক্কো সরকার জানিয়েছে, দু এক পসলা নয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ২ দিনের বৃষ্টি বার্ষিক গড় বৃষ্টি সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। এত অল্প সময়ে এত বৃষ্টি গত ৩০-৫০ বছরের মধ্যে হয়নি। প্রবল বৃষ্টির জেরে মরুভুমির আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি বদলাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে বাতাসে আদ্রতার প্ররিমাণ ব্যাপক বেড়েছে। ফলে বাষ্পীভবনের পরিমাণ বাড়বে। যার ফল আরও বেশি ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থা শুরু মরোক্কো নয়, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে খামখেয়ালি আবহাওয়ার কারণে ভুগতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
বানভাসি মরক্কোর বেশ কিছু ছবি প্রকাশ্যে এনেছে নাসা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মরোক্কোর জাগোরা ও টাটার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ইরিকুই হ্রদ জলে ভরে উঠেছে। গত ৫০ বছর ধরে শুকনো ছিল এই এই হ্রদ। জলমগ্ন সাহারার আরও বেশকিছু ছবি প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, ঢেউ খেলানো বালিয়াড়ির মধ্যে নদীর আকারে এঁকেবেঁকে চলে যাচ্ছে জলরাশি। হাওয়া অফিসের দাবি, রাবাত থেকে ৪৫০ কিমি দক্ষিণে তাগোউনিতে মাত্র ২৪ ঘন্টায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এই বেলাগাম বৃষ্টির পরিণতিও খুব একটা সুখকর হয়নি। গত কয়েক বছর ধরে খরা চলছিল মরোক্কোর বিস্তীর্ণ এলাকায়। এর পর এই বৃষ্টিতে মরুভূমির প্রবল গরম থেকে রেহাই মিললেও অতি বৃষ্টি ব্যাপক ক্ষতি করেছে কৃষিকাজের। মরুভূমির মাটির নিচে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। অতিবৃষ্টির ফলে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিস্থিতি ক্রমশ যে পথে এগোচ্ছে তাতে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সাহারার চরিত্রগত পরিবর্তন ঘটাতে পারে আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.