সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিমালয়ের (Himalayas) চিত্র বদলাচ্ছে, কমছে উচ্চতা। পর্বতমালা নাকি সরে সরে যাচ্ছে। বহু আগে থেকেই এমন তত্ত্ব প্রমাণস্বরূপ উঠে এসেছে। এবার হিমালয়ের ভূ-প্রকৃতিগত পরিবর্তনের কারণ হিসেবে বৃষ্টিকে (Rain) দায়ী করলেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, অঝোর বৃষ্টি ক্রমশ ঠেলে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে পর্বতমালাকে। নেপাল ও ভুটানজুড়ে বিস্তৃত হিমালয়ের বিস্তীর্ণ অংশের ভূমিক্ষয়ের ধরন দেখে, তার উপর দীর্ঘ গবেষণা চালিয়েই এমনটা বলছেন ভূ-বিজ্ঞানীদের একটা অংশ।
সম্প্রতি ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ নামে বিখ্যাত আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই তত্ত্ব। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে জোট বেঁধে হিমালয়ের ভূমিক্ষয় নিয়ে গবেষণা চালিয়েছিলেন। এই গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল, হিমালয়ের জন্মবৃত্তান্ত অর্থাৎ প্লেট টেকটনিক সরণের (Tectonic Movement) উপর আবহাওয়া পরিবর্তনের কেমন প্রভাব, তার উত্তর খোঁজা। এর জন্য তাঁরা মূলত নেপাল ও ভুটানের অংশকে বেছে নেন। কারণ, ওই এলাকার ভূ-প্রকৃতিই বেশি পরিবর্তিত হয়েছে সাম্প্রতিককালে। বিশেষত দু’দেশের মধ্য ও পূর্বাঞ্চল বরাবর ভূমির প্রকৃতি খতিয়ে দেখা হয়।
কীভাবে কাজটি হয়েছে? গবেষকদলের প্রধান ডক্টর বাইরন অ্যাডামস জানালেন, নেপাল ও ভুটানের পার্বত্য এলাকার ভূমিক্ষয়ের (Erosion) ধরন দেখে ল্যাবে একটি মডেল তৈরি করা হয়েছিল। তার উপরে যাবতীয় পরীক্ষা চলে। ক্ষয়ের হার কেমন, সেই হিসেব করা হয়। মূলত গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করেই এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরা। বৃষ্টি হলে ক্ষয়ের হার কতটা পরিবর্তিত হয়, তাও অঙ্ক কষেই বের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে যে সমতলীয় অংশের তুলনায় পার্বত্য অংশের মাটির ক্ষয় তুলনায় বেশি। আর সেটাই পর্বতমালা সরণের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গবেষণায় উঠে আসা এই নতুন তত্ত্ব শুধু হিমালয় পর্বতমালার জন্যই প্রযোজ্য, এমনটা নয়। বরং এর উপর ভিত্তি করে হাজার, লক্ষ বছর ধরে পার্বত্য অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি বদলের কারণ খোঁজার পথে হাঁটা যেতে পারে। এমনকী পাহাড়ি খাদ, উপত্যকা তৈরি, নদীর গতিপথ বদল – এসবের উত্তরও হয়ত নিহিত এই বৃষ্টির ফোঁটাতেই। সেদিক থেকে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা পথপ্রদর্শক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.