স্টাফ রিপোর্টার: স্বচ্ছ ভারত অভিযানে শামিল হয়ে রেল স্বচ্ছতা আনতে চায়। এজন্য ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করেছে তারা। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে সেই প্রচার চালাচ্ছে রেল। কিন্তু আদতে কি তা হচ্ছে? এই প্রশ্ন তুললেন যাত্রীরাই।
প্লাস্টিকের জলের বোতল পুনঃচক্রায়ণও বন্ধ করা হচ্ছে এই অভিযানে। ট্রেনে জলের বোতল ব্যবহারের পর তা বাইরে নিয়ে যাওয়া বা ফেলা চলবে না। যাত্রীদের কাছ থেকে খালি বোতল সংগ্রহ করবেন ক্যাটারিং কর্মীরা। এছাড়া যাত্রীরা স্টেশনে জলের বোতল ব্যবহারের পর খালি বোতল ক্রাশিং মেশিনে ঢুকিয়ে দিতে হবে। এজন্য প্রতিটি স্টেশনে বোতল ক্রাশিং মেশিন বসানো শুরু করেছে রেল। মেশিন বসলেও অনভ্যাসে তা মেশিন পর্যন্ত যাচ্ছে না। খোদ আইআরসিটিসির কর্মীরাই অন্তিম স্টেশনে এসে বোতল জড়ো করে তা স্টেশনের উপরই ফেলে দিচ্ছে। বুধবার রাতে রাঁচি-শতাব্দী হাওড়া ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসার পর যাত্রীরা নেমে গেলেই শ’য়ে শ’য়ে ব্যবহৃত জলের বোতল প্ল্যাটফর্মেই ফেলে দেন আইআরসিটিসির কর্মীরাই বলে যাত্রীদের অভিযোগ। এই বোতল আবার সংগ্রহ করাও শুরু করে ভবঘুরের দল। এই বোতলই পুনঃচক্রায়িত হবে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
তাঁদের কথায়, “সবক শিখায়গা কৌন।” বিষয়টি জানতে পেরে হাওড়ার ডিআরএম বলেন, আইআরসিটিসিকে আগেও এই বিষয়ে জানানো হয়েছে। তবে তাঁদের কর্মীরা এই কাজ করেন না বলে তিনি জানান। প্রমাণ পেতে সারপ্রাইজ চেকিং চালাবে রেল। হাওড়ার সিনিয়র ডিসিএম বলেন, হাওড়া স্টেশনে দু’টি বোতল ক্রাশিং মেশিন বসানো হয়েছে। আইআরসিটিসির কর্মীদের এই কাজ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও বেআইনি। দরকারে সংস্থাকে জরিমানার হুমকি দিয়ে এক অফিসার বলেন, আইন ভাঙলে জরিমানা দিতে হবে লঙ্ঘনকারীকে। সে যেই হোক। আইআরসিটিসি অবশ্য এনিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
স্টেশনে ভেন্ডারদেরও ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার না করেন। যাত্রীরাও যেন সতর্ক থাকেন এ বিষয়ে। ৫০ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক নিয়ে স্টেশন, ট্রেন ও মেট্রো স্টেশনে না ঢোকেন। পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে রেল এই উদ্যোগ নিয়েছে। রেল কর্তারা জানিয়েছেন, প্লাস্টিক এমন এক রাসায়নিক পদার্থ যা পরিবেশে পচতে ও পুনঃপ্রক্রিয়ার জন্য বহু সময় নেয়। ‘অপচ্য’ হওয়ায় পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির প্রভাব পড়ে। প্লাস্টিক উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণীর ক্ষতির সঙ্গে মানুষেরও ক্ষতি করে। হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষতির কারণ এই প্লাস্টিক দূষণ। পরিবেশকে সুস্থ রাখতে আমেরিকায় ২৪ শতাংশ প্লাস্টিক পুনঃচক্রায়ণ করা হয়। বাংলাদেশও প্লাস্টিক ব্যবহারের উপর আইন প্রণয়ন করে। এবার ভারতীয় রেলও পদক্ষেপ করল স্টেশন ও ট্রেনের যাত্রীদের প্লাস্টিক ব্যবহারের উপর। কতটা ফলপ্রসূ হবে তা প্রমাণ হবে আইন চালুর পরেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.