অভিষেক চৌধুরী, কালনা: পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গ্রে হেরন থেকে গ্রে হেডেড ল্যাপউইং, গ্লসি আইবিশের মতো পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করেছে এবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বাঁশদহ বিলে। সেকারণে দূরদূরান্ত থেকে ভিড় করছেন পর্যটকরা। ভিড়ের কারণে লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে শনিবার প্রাথমিক পর্যায়ে পাখি গণনার কাজ শুরু হয়। জানুয়ারী মাসে সেই কাজ জোরকদমে করা হবে বলে জানান কাটোয়ার রেঞ্জার। পরিযায়ীদের সুরক্ষায় বনদপ্তরের পাশাপাশি এলাকায় সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও।
শীত পড়তেই ঝাঁক-ঝাঁক পরিযায়ী ভিড় করে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের চুপির ছাড়িগঙ্গার জলাশয়ে। যা দেখতে বিভিন্ন জেলা, এমনকি ভিনরাজ্যের পক্ষীপ্রেমীরাও ছুটে যান সেখানে। এবারও পরিযায়ীরা সেখানে আসতে শুরু করলেও জলাশয়ে কচুরিপানা ভর্তি। তাই সমস্যা তৈরী হচ্ছে পরিযায়ীদের। অন্যদিকে, পূর্বস্থলী ১ ব্লকে বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা বাঁশদহ বিলে পরিযায়ীদের নজরকাড়া ভিড় দেখা গিয়েছে কয়েকদিন ধরে। তাই ভিড়ও বাড়ছে পক্ষীপ্রেমী পর্যটকদের। পূর্ব বর্ধমান জেলা সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক তথা পক্ষীপ্রেমী প্রিয়ব্রত মুখোপাধ্যায়, শিক্ষারত্ন তাপস কুমার কার্ফারা বর্ধমান ও কালনা থেকে শনিবার ক্যামেরা নিয়ে পরিযায়ী দর্শনে যান।
প্রিয়ব্রতবাবু জানান, “চুপিতে এবার পাখির সংখ্যা অন্য বছরের তুলনায় তুলনামূলকভাবে খুব কম এসেছে। যদিও বাঁশদহ বিলে এবার যেন আগের তুলনায় আরও বেশি পাখি এসেছে। সচরাচর দেখা মেলে না গ্রে হেরন, গ্রে হেডেড লাপউইং, গ্লসি আইবিশের মত পরিযায়ীদেরও দেখা মিলেছে। যা পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এছাড়াও লিটল গ্রীব, গ্রেট করমোরান্ট, লেসার হুইসলিং ডাক, কটন পিগনিগুজ, হোয়াইট ব্রেস্টেড ওয়াটারহেন, পারপল মুরহেন, কমন মুরহেন, কমনকূট, স্মল ব্লু কিংফিশার, ব্রোঞ্জ উইং জাকানা মত প্রচুর প্রজাতির পাখি আসতে শুরু করেছে।”
রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা সহ অন্য কর্মীরা উপস্থিত হন সেখানে। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। রেঞ্জার জানান, “গত বছর এখানে প্রায় ৩০ প্রজাতির পরিযায়ীরা এসেছিল। গণনায় সংখ্যাটা ছিল ৬ হাজার ৭০০। আগামী ৭-৮ জানুয়ারী পাখি গণনার সম্ভাব্য তারিখ ঠিক হয়েছে। শনিবার প্রাথমিক পর্যায়ে পাখি গণনায় প্রায় ৪-৫ হাজার পাখি এসেছে বলে জানা গিয়েছে। শীত বাড়লেই পাখির সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলেই আশা রাখি।” মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, “পরিযায়ীদের সুনিশ্চিত আশ্রয় দিতে না পারলে তারা আর আসবে না। চুপির চরে অনেক সমস্যা হচ্ছে। কচুরিপানা রয়েছে। কিছু পাখি থাকলেও অনেক পাখি থাকতে চায় না। তাদের সুরক্ষায় সচেতনতার প্রচার চালানো হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.