সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দূষণের হাত থেকে দামোদরকে রক্ষা করা গেলেও রক্ষা পেল না দুর্গাপুরের অন্যান্য জলাশয়গুলি। প্রতিমা নিরঞ্জনের ফলে দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন পুকুর বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। জলস্তর ভরে উঠেছে প্রতিমার কাঠামোয়। নষ্ট হচ্ছে জলাশয়ের জীব বৈচিত্র্য। আর এই দৃশ্যই বেশ চিন্তায় ফেলছে পরিবেশপ্রেমীদের।
দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভাবা রোডের পুকুর এই এলাকার অন্যতম বড় জলাশয়। দীর্ঘদিন ধরে এই পুকুরটি স্থানীয় বাসিন্দারা দৈনন্দিন নানা কাজে ব্যবহার করে। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রয়োজনেও এই জলাশয়টি ব্যবহার করা হয়। মাছ চাষও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই পুকুরেই দশমী থেকে জমছে প্রতিমার কাঠামো। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী, চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে কাঠামো তুলে নিতে হয়। কিন্তু ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ভাবা রোডের পুকুর থেকে তোলা হয়নি কাঠামো। প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি কাঠামো পড়ে রয়েছে পুকুরে।
প্রতিমার সঙ্গে পুজোর পচনশীল সামগ্রীও পচছে পুকুরেই। প্রায় একই হাল দুর্গাপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষ্কাপুর পুকুরেরও। সেখানেও প্রায় গোটা দশেক কাঠামো ও প্রতিমার পচনশীল দ্রব্য জমেছে পুকুরেই। দুর্গাপুর নগর নিগম দামোদরকে দূষণমুক্ত করতে যতটা না তৎপর, ঠিক ততটাই উদাসীন শহরের জলাশয়গুলিকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে। অভিযোগ, দুর্গাপুর নগর নিগম থেকে প্রতিটি বোরো কমিটিকে জলাশয় সাফ করার নির্দেশ দিলেও বোরো কমিটিগুলি তা গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেই জলাশয়গুলির এমন বেহাল দশা।
এনিয়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীব ঘোষ জানান, “দ্বাদশী পর্যন্ত বিসর্জনের শেষ সময়। তাই ত্রয়োদশী থেকেই কাঠামো তোলার কাজ শুরু হবে। কুড়ি জন সাফাই কর্মীকে একযোগে কাজে লাগানো হবে। ওই দিনেই সব কাঠামো তুলে পুকুর সাফ করে দেওয়া হবে।” তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বা দুর্গাপুর নগর নিগমের নির্দেশ সত্বেও কাঠামো তুলতে দেরি হল কেন, সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি ১ নম্বর বোরো চেয়ারম্যান রিনা চৌধুরি। তিনি জানান, “এই বোরোর অন্তর্গত পুকুরগুলি থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে কাঠামো।” এই কথা এখন কত দ্রুত বাস্তবায়িত হয়, সেদিকেই তাকিয়ে পরিবেশপ্রেমীরা।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.