Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kankana Baor

দূষণ বেড়েছে, নেই সচেতনতাও, কঙ্কনা বাওড় থেকে মুখ ফিরিয়েছে পরিযায়ীরা

বছর দুই আগেও সেখানে ১০-১২ রকম মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার পাখির দেখা মিলেছিল।

Pollution increased in Kankana Baor of Gobardanga
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:March 18, 2025 3:05 pm
  • Updated:March 18, 2025 3:05 pm  

অর্ণব দাস: সে আজ থেকে প্রায় দুশো-আড়াইশো বছর আগেকার কথা। নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তৈরি হয়েছিল অশ্বক্ষুরাকৃতির হ্রদ কঙ্কনা বাওড়। তারপর থেকে ফি বছরই সেই বাওড়ে দেখা মিলত দেশি-বিদেশি হরেক প্রজাতির পাখির। প্রায় কুড়ি-বাইশ রকম তো হবেই। বছর দুই আগেও সেখানে ১০-১২ রকম মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার পাখির দেখা মিলেছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, তারপর থেকে পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করেছে কঙ্কনা বাওড়ে। চলতি বছর গোবরডাঙার এই বাওড়ে ৪-৫ রকম মিলিয়ে মাত্র ৫০০ পাখির দেখা মিলছে। রাজ্যের অন্যান্য ঝিল, জলাশয়ের মতোই এখানেও পাখির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পরিবেশ কর্মীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবরডাঙা ও স্বরূপনগর এলাকায় অবস্থিত ২৩০ একরের এই কঙ্কনা বাওড় আগে ছিল আদপে যমুনা নদীর অংশ। পরবর্তীতে নদী গতিপথ পরিবর্তন করলে ‘নদী-বাঁক’ অংশে জল রয়ে গিয়ে তৈরি হয় অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। এরপর স্থানীয়দের মুখে মুখে এর নাম হয় কঙ্কনা বাওড়। তবে এখনও এই জলাশয়টি রত্না খালের মাধ্যমে যমুনা নদীর সঙ্গে যুক্ত। মৎস্যজীবীদের জীবিকার অন্যতম মাধ্যমও এটি। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাস থেকেই এই বাওড়ে আসতে শুরু করত দেশি-বিদেশি নানা জাতের পাখি। থাকত মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। কী না ছিল তাদের মধ্যে!

Advertisement

সরালি, কটন পিগমি গুজ, লালঝুঁটি ভূতি হাঁস, সিঁথি হাঁস, নর্দার্ন পিনটেল, গাদওয়াল, রাম চ্যাগা, সরলা বাটন-সহ নানা পাখি দেখতে সেখানে ভিড় করতেন পরিবেশপ্রেমীরা। কিন্তু বিগত দুবছর ধরে সরালি, কটন পিগমি গুজ ছাড়া আর কোনও পাখির দেখা মিলছে না। এটাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের। এর জন্য পরিবেশ দূষণ থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের বক্তব্য, ব্যাপকহারে পরিবেশ দূষণ এবং আশপাশে নগরায়ণের জেরে হাওড়ার সাঁতরাগাছি ঝিল থেকে যেমন পরিযায়ী পাখিরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তেমনই অবস্থা হয়েছে কঙ্কনা বাওড়ের।

পরিবেশপ্রেমী জয়দেব সমাদ্দারের কথায়, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরবঙ্গ সহ বিভিন্ন এলাকার পাখি কঙ্কনা বাওড়ে আসতে দেখেছি। কিন্তু বাওড়ের সংস্কারের অভাবের জন্যই এখন এই অবস্থা। নাব্যতাও কমে গিয়েছে। কচুরিপানা জমলে জেলেরাই স্প্রে করে পরিষ্কার করছে, ফলে দূষণের কারণে মাছ কমেছে। এই কারণে শীতকালে খাবারের টানে আর পাখিরা আসছে না। প্রশাসন উদ্যোগী হলে কঙ্কনা বাওড়কে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক এবং মৎস্যদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub