সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুঞ্জীভূত মেঘের সারি। গুরুগ্রহ বৃহস্পতির (Jupiter) বিশাল জায়গাজুড়ে এভাবে মেঘ জমে রয়েছে, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক মহাকাশবিজ্ঞানী। ক্লাইড ফস্টার নামে সেই নভোচরের দাবি যে খাঁটি, তার প্রমাণ দিয়েছে ‘জুনো’ নামে নাসার (NASA) শক্তিশালী টেলিস্কোপের ছবি। গত ১৫ তারিখ সেসব ছবি দেখার পর আপ্লুত বিজ্ঞানীরা বৃহস্পতির এই অংশের নামকরণ করেছেন ক্লাইডের নামেই। পুঞ্জীভূত মেঘসমৃদ্ধ গুরুগ্রহের এই অংশের নাম – ক্লাইডস স্পট (Clyde’s Spot)। নাসাও বিবৃতি দিয়ে এই ঘোষণা করেছে। ফলে এই মুহূর্তে বৃহস্পতি সংক্রান্ত গবেষণায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন ক্লাইড ফস্টার নামের মহাকাশবিজ্ঞানী।
মাত্র ১ বছর আগে নিজের ১৪ ইঞ্চির টেলিস্কোপ দিয়ে বৃহস্পতির ওই দৃশ্য দেখতে পেয়েছিলেন ক্লাইড ফস্টার। দেখেছিলেন, বৃহস্পতিকে ঘিরে থাকা আবহাওয়ায় ঘনীভূত মেঘ ধোঁয়ার আকারে উপরের দিকে চলমান। যে অংশ জুড়ে তা দৃশ্যমান হয়েছিল ক্লাইডের ১৪ ইঞ্চি টেলিস্কোপের, তার চেয়ে অন্তত দ্বিগুণ অংশে ওই ঘটনা ঘটে চলেছে। গুরুগ্রহের এই এলাকা পরিচিত ‘সাউথ টেম্পারেট বেল্ট’ নামে।নাসার ‘জুনো’র (Juno) পাঠানো ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন, ছোট টেলিস্কোপে ক্লাইডের পর্যবেক্ষণ অভ্রান্ত হলেও অনেক ছোট পরিসরে তিনি তা দেখতে পেয়েছিলেন। তবে ওই টেলিস্কোপেও যে এতটা নিখুঁত হতে পারে, সেই দক্ষতাকে সম্মান জানিয়ে ক্লাইডের নামে নামাঙ্কিত হল বৃহস্পতির ওই অংশ।
নাসা জানিয়েছে, বৃহস্পতির ‘গ্রেট রেড স্পট’ অংশের উপরে এই মেঘ দেখা গিয়েছে। এই অংশটিই পৃথিবীর অন্তত ১.৩ গুণ। তবে এই মেঘাচ্ছন্ন অবস্থা খুব ক্ষণস্থায়ী। এমনকি বৃহস্পতির আবহাওয়ায় যে কোনও পরিবেশই বেশিক্ষণের জন্য তৈরি হয় না। জুনোর পাঠানো ছবিগুলো ভালভাবে বিশ্লেষণ করে এমনই বুঝেছেন নাসার অভিজ্ঞ বিজ্ঞানীমহল। দক্ষিণ আফ্রিকান বিজ্ঞানী ক্লাইডের চোখে পড়েছিল, নতুন করে কোনও দাগ তৈরি হয়েছে বৃহস্পতির বুকে। মিথেন গ্যাস ঘনীভূত হলে যেমন দাগ পড়ে, তার সঙ্গে অনেকটা মিল রয়েছে বলে মনে হয়েছিল তাঁর। তবে তা কিছুক্ষণ পর উধাও হয়ে যায়। এবার জুনোর মাধ্যমে সেই উধাও হয়ে যাওয়ার রহস্যই ভেদ করলেন বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতির আকাশে ঝড় উঠলে, তার বিস্তার অন্তত ৩২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। তবে দ্রুতই পুঞ্জীভূত মেঘ সরে যায়। তাই সবই অতি ক্ষণস্থায়ী। জুনোর মাধ্যমে বৃহস্পতির অনেক অজানা তথ্যই এভাবে প্রকাশ্যে এল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.