অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: ঘরের ভেতর ওটা কে? লেপার্ড ভেবে শোরগোল পুরুলিয়ার কোটশিলায়। ঝুঁকি না নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটলেন বনদপ্তরের কর্মী থেকে পুলিশ। পরে ছবিতে স্পষ্ট হয়, ওটা বাংলার ফিশিং ক্যাট (Fishing Cat) বা মেছো বিড়াল। কোনও হিংস্র প্রাণী নয়। পুরুলিয়া ডিভিশনের ডিএফও কার্তিকেয়ন এম জানান, “খাবারের সন্ধানে কোনওভাবে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল মেছো বিড়ালটি। চিনতে না পারায় এলাকায় লেপার্ড বলে গুজব ছড়ায়। বনদপ্তরের তরফে মাইকে প্রচার করে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।”
শনিবার পুরুলিয়া(Purulia)ডিভিশনের কোটশিলা রেঞ্জ এলাকার নওয়াহাতু বিটের ডামরু ঘুটু গ্রামে এক গৃহস্থের ঘরে ঢুকে পড়েছিল ওই বন্যপ্রাণীটি। সিমনী-জাবর পাহাড় থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে ওই গ্রামের একটি বাড়ির রান্নার ঘরের উপরে বসে থাকতে দেখা যায় প্রাণীটিকে। নতুন ধরনের এই প্রাণী দেখে তার ছবি মোবাইল বন্দি করেন কেউ কেউ। আর তারপরেই রটে যায়, গ্রামে চিতা ঢুকেছে।
আসলে এই গ্রাম থেকে দু’কিলোমিটার দূরেই টাটুয়াড়া। সেখানেই ২০১৫ সালের জুন মাসে এক গৃহস্থের বাথরুমে ঢুকে পড়েছিল একটি চিতাবাঘ (Leopard)। কিন্তু পরে মর্মান্তিক পরিণতি হয় তার। উৎসুক এলাকাবাসীর অত্যাচারে বিরক্ত হয়ে লাফ দিয়ে পালাতে গিয়ে থাবার নখের আঁচড়ে জখম হন এক পুলিশ আধিকারিক-সহ তিনজন। এরপরেই কয়েক হাজার মানুষ লাঠি, ধরালো অস্ত্র পিটিয়ে মারে ওই পুরুষ চিতাবাঘটিকে। কেটে নেওয়া হয় লেজ। উপড়ে ফেলা হয় দাঁত, নখ, লোম। ওই ঘটনার পর এলাকায় প্রায়ই লেপার্ডের গুজব রটত।
অবশেষে ২০২০ ফেব্রুয়ারি মাসে সিমনি-জাবরের জঙ্গলে বনদপ্তরের পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায় (Trap camera) ধরা পড়ে একটি পুরুষ চিতাবাঘের ছবি। পরে ধাপে ধাপে ছবি ধরা পড়ে মাদি এবং শাবকের। এদিন টাটুয়াড়ার ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তাই আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি পুলিশ, বনদপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.