Advertisement
Advertisement
পার্থেনিয়াম

কাশবন গ্রাস করছে পার্থেনিয়াম, অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

ক্রমেই কমছে কাশবনের আয়তন।

Number of Kash flowers is decreasing because of parthenium
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 14, 2019 3:09 pm
  • Updated:September 14, 2019 4:05 pm  

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: ‘সবেতো এই বর্ষা গেল, শরৎ এল মাত্র, এরই মধ্যে শুভ্র কাশে, ভরেছে তোমার গাত্র’। কবি নির্মলেন্দু গুণ ‘কাশফুলের কাব্য’তে এভাবেই বর্ণনা করেছিলেন শরতের আগমনিকে।

এপার-ওপার, দুই বাংলাতেই শরৎ ঋতু ও কাশফুল যেন সমার্থক। বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবের আগমন বার্তা বয়ে আনে ওই কাশফুলই। কাশের দোলায় বাঙালির হৃদয়ে বেজে ওঠে পুজোর বাদ্যি রেললাইনের ধারের কাশবনে অপু-দুর্গারা আজও দৌড়ে যায়। কিন্তু সেই কাশ যদি একদিন উধাও হয়ে যায়! তাহলে শরতের যৌবনটাই তো হারিয়ে যাবে। ঠিক এমনটাই আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদ ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা। কাশবনের আয়তন কমতে শুরু করেছে। সেখানে বিপুল হারে বেড়ে উঠছে বিদেশি গাছ পার্থেনিয়াম। বছরের পর বছর বিষাক্ত পার্থেনিয়ামের দাপটে ঘনত্ব কমছে কাশবনের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বায়ুমণ্ডলে ছিল পর্যাপ্ত অক্সিজেন, একসময় বসবাসের যোগ্য ছিল মঙ্গল]

বছর দশেক আগেও গ্রামবাংলার নদীর কূলে, বিলজুড়ে, খালের পাড়ে কাশফুলের ছড়াছড়ি থাকত। শরতের আকাশের পেঁজাতুলোর মত মেঘের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সৌন্দর্য ছড়াত কাশও। মনও কেড়ে নিতে এক পলকে। মনে বাজতে শুরু করত দুর্গোৎসবের বাদ্যি। কিন্তু এখন সেখানে অশনি সংকেত দেখা দিতে শুরু করেছে। কৃষি ও উদ্ভিদবিদরা জানাচ্ছেন, কাশবনকে গ্রাস করছে পার্থেনিয়াম। বিগত কয়েক বছর ধরে যা ছেয়ে গিয়েছে চারিদিকে। কৃষিজমি ও অন্যান্য উদ্ভিদের ব্যাপকভাবে ক্ষতি করছে। দেশীয় যে সমস্ত গাছ-গাছালি রয়েছে তাদেরও বৃদ্ধিতে, বংশবিস্তারে অন্তরায় হয়ে ওঠে পার্থেনিয়াম। অভিযোজনের নিয়মে অন্য গাছেদের তুলনায় নিজেকে টিকিয়ে রাখার ক্ষমতা বেশি পার্থেনিয়ামের।

kash

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শান্তুনু ঝা বলেন, “বিদেশি গাছের মধ্যে পার্থেনিয়ামের বৃদ্ধির হার খুব বেশি। যা স্থানীয় নানা উদ্ভিদের ক্ষতি করে। সেই কারণেই মাঠেঘাটে কাশফুলের জায়গায় দেখা যাচ্ছে পার্থেনিয়াম।” তবে তিনি জানিয়েছেন, পার্থেনিয়াম কাশের বৃদ্ধিতে ঠিক কতটা ক্ষতি করছে তা গবেষণার বিষয় হতে পারে। এখনও এই বিষয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে কোনও তথ্য অবশ্য নেই। উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক পলাশ সাঁতরাও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “রাস্তার ধারে এখন শুধুই পার্থেনিয়াম। কাশবনের ঘনত্ব কমছে। এটা অশনি সংকেত। আগামিদিনে শরতে হয়তো পার্থেনিয়ামই দেখা যাবে। কাশের দেখা মিলবে না।”

[আরও পড়ুন: পর্যটনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার পাঠ, জলদাপাড়া ভ্রমণে বদলের ভাবনা বনদপ্তরের]

অপু-দুর্গাদের জন্য এখনই পার্থেনিয়াম নিধনের প্রয়োজন। না হলে সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালির সেই দৃশ্য হয়তো শুধু চলচ্চিত্রেই থেকে যাবে। বাংলার বুকে সেই দৃশ্যের দেখা মিলবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement