গৌতম ব্রহ্ম: পঞ্চবটীর ছায়া সাধকদের বরাবরের পছন্দ। দক্ষিণেশ্বরের পঞ্চবটী বনের ডালপালায় কতশত অলৌকিক গল্প জড়িয়ে, কতবার এখানে সমাধিস্থ হয়েছেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব! পঞ্চবটী খুব প্রিয় ছিল রবিঠাকুরেরও। উত্তরায়নের পাশে বিশ্বকবির হাতে লাগানো বট, অশ্বত্থ, আমলকী, বেল, অশোক এখনও ছায়া দেয়।
এবার তেমন পঞ্চবটী অরণ্য মাথা তুলবে শহর থেকে সামান্য দূরে, নিউটাউনের (Newtown) বুকে। এর জন্য ৭ নং ভার্জ ইতিমধ্যে ১.৩ একর জায়গা বরাদ্দ হয়েছে। পুজোর আগেই ওখানে পঞ্চবটীর চারা রোপন করা হবে। স্মার্ট সিটি (Smart City) হওয়ার শর্ত হিসাবেই নিউটাউন-রাজারহাটে ৩৩ শতাংশ জায়গা সবুজ রাখতে হবে। এতটা জায়গা জুড়ে সবুজ রক্ষা করা সরকারের পক্ষে যেমন ব্যয়সাপেক্ষ, তেমনই ঝক্কির। তাই বনসৃজনের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে জমি দত্তক দিচ্ছে নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (NKDA)। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে নিউটাউন কলকাতা কেয়ার ফাউন্ডেশন (NKCF) নামে সংস্থাটি আবেদন জানিয়েছিল। বনসৃজনের জন্য এদের দু’টি জায়গা সম্প্রতি বরাদ্দ করেছে এনকেডিএ। তার একটাতেই মাথা তুলবে পঞ্চবটী।
এনকেসিএফ’এর তরফে ডা. অচিন্ত্য মিত্র জানিয়েছেন, “বট, অশ্বত্থ, আমলকী, বেল, অশোক। পাঁচটি বৃক্ষ নিয়ে পঞ্চবটী। সাধকদের কাছে যার গুরুত্ব অপরিসীম। এর ছায়ায় যেমন শান্তি, তেমনই রয়েছে ভেষজ গুণ।” পঞ্চবটীর প্রস্তাবে সায় দিয়ে হিডকো ১.৩ একর জমি বরাদ্দ করেছে। তাতে তৈরি হবে দক্ষিণেশ্বরের পঞ্চবটী পার্ক। আর ২.৫ একর বরাদ্দ হয়েছে ‘পোষণ পার্ক’ তৈরির জন্য। অচিন্ত্যবাবু এই খবর জানিয়ে বলেন, “বিদেশ থেকেও ভাল ফলের চারা আনা হচ্ছে। যেখানে ৫০ রকমের ফলের গাছ লাগানো হবে।” অচিন্ত্যবাবু আয়ুর্বেদ চিকিৎসক। তাই এসব গাছগাছড়ার গুণাবলি বিলক্ষণ জানেন। এবং সেই জ্ঞানই তিনি বনসৃজনের ক্ষেত্রে কাজে লাগাচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য, ভেষজ গাছ শুধু যে সৌন্দর্যবর্ধক তাই নয়, এর অনেক রোগনাশক ভূমিকাও রয়েছে।
পঞ্চবটী নিয়ে বনদপ্তরও কাজ করছে। বর্ধমানের আউশগ্রামে বনদপ্তরের আধিকারিকদের স্ত্রীরা দল বেঁধে সবুজায়নে নেমেছেন। তাঁদের অনুপ্রেরণা আবার পৌরাণিক চরিত্র – সীতা। ওঁদের তৈরি পঞ্চবটীতে এই পৌরাণিক চরিত্রের মূর্তিও রাখা হবে। যাতে মানুষ পুরাণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.