পৌষালি কুণ্ডু: কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর ঘণ্টা কয়েকের অপেক্ষা। তারপরই ইতিহাস সৃষ্টি করবে ভারত। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম পৌঁছনো দেশ হিসাবে জয়ধ্বজা ওড়াবে ISRO। দেশজুড়ে শুরু হয়ে যাবে উৎসব। বিশ্বাস হচ্ছে না? মনে হচ্ছে স্বপ্ন! যদি শেষমেশ চন্দ্রযান ২ বা রাশিয়ার লুনা ২৫-এর মতো ভেঙে পড়ে, ভেবে আশঙ্কিত হচ্ছেন? দুশ্চিন্তা উড়িয়ে সকলকে নিশ্চিন্ত হওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
“দুশ্চিন্তার কিচ্ছু নেই। ফিঙ্গার ক্রস করে, টেনশনে টিভির পর্দায় চোখ রাখতেও হবে না। ফুরফুরে মেজাজে থাকুন। আজ ‘আমরা করব জয় নিশ্চয়’। মহাবিশ্বের কোনও কিছুই আর অঘটন ঘটাতে পারবে না। চন্দ্রযান ৩-এর সব কিছু খারাপ হয়ে গেলেও একদম সেফ ল্যান্ডিং করবে। এবার এতটাই আত্মবিশ্বাসী আমরা।” গভীর প্রত্যয়ে এই কথাগুলিই বলে গেলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোয় কর্মরত এক তরুণ বাঙালি বিজ্ঞানী।
কী করে আপনি এত শিওর হচ্ছেন? জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এই ইসরো বিজ্ঞানী বললেন, “আগেরবারের ভুলত্রুটিগুলো সব রেকর্ডে ধরা পড়েছিল। সেগুলি মাথায় রেখেই এবারের অভিযান ডিজাইন করা হয়েছে। এই অভিযান সাত সিগমা পর্যন্ত অ্যানালিসিস করে করা হয়েছে। সাধারণত তিন সিগমা বা পাঁচ সিগমা পর্যন্ত বিশ্লেষণ করে কোনও অভিযান হয়। অর্থাৎ কোনও অভিযান কত রকমভাবে ব্যর্থ হতে পারে, তা আগে থেকেই ক্যালকুলেশন করে দেখা হয়। তারপর সেই ভুলগুলি ঠিক করে নেওয়া হয়। হতে পারে, ২০০, ৩০০ বা ৪০০ উপায়ে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়া গেল। তাহলে ওই ৪০০ রকম ত্রুটিকেই ঠিক করে নিতে হবে। এরকম যত বেশি ব্যর্থতার সম্ভাবনাকে আগে থেকে শনাক্ত করা যায় এবং তার সমাধানের পর সিস্টেম ডিজাইন করা হয়, তত বেশি সাফল্যের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই সাত সিগমায় ডিজাইন করা চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি।”
এদিকে বিক্রমের অবতরণের সময় চাঁদের আবহাওয়া কেমন থাকবে তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। অনুকূল পরিবেশ থাকবে কি না তা স্পষ্ট হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে আজ সূর্যোদয় হওয়ার পর। নামার আগে সব কিছু আরও একবার পরীক্ষা করে নেবেন বেঙ্গালুরুতে ইসরোর অফিসে বসে থাকা বিজ্ঞানীরা। অসুবিধা মনে হলে আগামী মাসে ফের অবতরণের চেষ্টা করবে বিক্রম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.