সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবছরের পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করল সুইডিস রয়্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস। ব্রহ্মাণ্ডের বিবর্তন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও ভিনগ্রহ আবিষ্কারের জন্য এবার পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন কানাডিয়ান-মার্কিন বিজ্ঞানী জেমস পিবলস, সুইজারল্যান্ডের দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানী মিশেল মেয়র ও দিদিয়ের ক্যুয়েলজ। মঙ্গলবার দ্য রয়্যাল সুইডিস অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সস-এর তরফে ঘোষণা করা হয়, এবার পুরস্কার মূল্যের অর্ধেক পাচ্ছেন জেমস পিবলস। আর বাকি অর্ধেক অংশ দু’ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে মিশেল এবং দিদিয়ের ক্যুয়েলজের মধ্যে।
মহাবিশ্বের সৃষ্টি হল কী করে? এর পেছনে রহস্য বা বিজ্ঞান কী? ব্রহ্মাণ্ডের বিবর্তন এবং বিগ ব্যাংয়ের বিষয়েই গবেষণা কানাডিয়ান-মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী জেমস পিবলসের। গত ৫০ বছর ধরে এ বিষয়ে অসংখ্য নামজাদা বিজ্ঞান পত্র-পত্রিকায় তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। বিগ ব্যাং বিষয়ক গবেষণায় যে সকল বিজ্ঞানীর নাম ওঠে আসে তার মধ্যে তাঁর নাম অন্যতম। এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস পিবলস (৮৪) ফিজিক্যাল কসমোলজি (সৃষ্টিতত্ত্ব)-এর উপর তাঁর তাত্ত্বিক গবেষণার জন্য নোবেল পেলেন।
১৪০০ কোটি বছর আগের একটি সুবিশাল বিস্ফোরণ থেকে কীভাবে আজকের মহাজগতের সৃষ্টি হল, সেই নিয়েই গবেষণা পিবলসের। তাঁর তত্ত্ব ব্রহ্মাণ্ডের গঠন, বিবর্তন ও ইতিহাস, এমনকী বিগ ব্যাংয়ের বিষয়ে আরও সঠিকভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে। তাঁর গবেষণার মাধ্যমে উঠে আসে যে সমগ্র মহাবিশ্বের মাত্র পাঁচ শতাংশই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। বাকি ৯৫ শতাংশ অজানা এবং ডার্ক এনার্জি দিয়ে গঠিত। এই ডার্ক এনার্জি বা ডার্ক ম্যাটারই সৌরজগতগুলির বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মিশেল মেয়র ও দিদিয়ের কুয়েলজ ১৯৯৫ সালে প্রথম আমাদের সৌরজগতের বাইরের একটি গ্রহের সন্ধান দেন। দক্ষিণ ফ্রান্সের হাউট-প্রোভেন্স পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে বিশেষভাবে গঠিত যন্ত্রের সাহায্যে তাঁরা সৌরজগতের বাইরে ‘ফিফটি ওয়ান পেগাসি বি’ নামের একটি গ্রহের সন্ধান পান। তাঁদের এই সন্ধানের ফলে ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণার পরিধি আরও বিস্তৃত হয়। জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিশেল মেয়র (৭৭) ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্যুয়েলজ (৫৩) যৌথভাবে আটের দশকের শেষের দিকে সৌরমণ্ডলের বাইরের গ্রহ খোঁজার কাজ শুরু করেন। তাঁরা প্রথম এমন একটি গ্রহ খুঁজে বের করেন যা সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। গ্রহটি আমাদের বৃহস্পতি গ্রহের আকারের।
আকাশগঙ্গা ছায়াপথে সেটিও সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছিল। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পর থেকে আকাশগঙ্গা ছায়াপথে এখনও পর্যন্ত প্রায় চার হাজার ভিনগ্রহ খুঁজে পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সেই গ্রহগুলি নানা আকার ও নানা চরিত্রের। জেমস পিবলস, মিশেল মেয়র এবং দিদিয়ার ক্যুয়েলজের গবেষণার ফল, ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে আমাদের প্রচলিত ধারণাই বদলে দিয়েছে। তারই স্বীকৃতি হিসেবে তাঁদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রয়্যাল সুইডিস অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.