সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন’। জীবনানন্দ দাশ এই কবিতা লেখার পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক দশক। এই সময়কালে পৃথিবীর সেই অসুখ আরও গভীরে পৌঁছে গিয়েছে। যার অন্যতম কারণ জলবায়ু বিপর্যয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate change) কুফলের ধাক্কায় ৬৫ শতাংশ কীটপতঙ্গ এই নীল গ্রহ থেকে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আগামী শতাব্দীর মধ্যেই এই অবস্থা ঘটবে। ফলে মানুষের জীবনধারণ আরও অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের হয়ে যাবে।
‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। যেখানে বলা হয়েছে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পশুদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। পতঙ্গদের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই। ফলে সব মিলিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন যতটা ক্ষতি করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছিল, তার থেকেও বেশি ক্ষতি করে দিয়েছে।
এপ্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নাসার এক গবেষক ড. কেট ডাফি বলছেন, ”আমাদের একটা এমন পদ্ধতি দরকার যার সাহায্যে তাপমাত্রার প্রভাবে কীটপতঙ্গদের ক্ষতির দিকটি সঠিক ভাবে নির্ধারণ করা যাবে।” তাঁর দাবি, সেদিকে তাকিয়েই তাঁরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিগগিরি এবিষয়ে যথাযথ ধারণা করা সম্ভব হবে বলে দাবি কেটের।
গবেষকদের দাবি, পরিস্থিতি ক্রমেই এমন দিকে যাচ্ছে যার ধাক্কায় সারা পৃথিবীর ৩৮টি প্রজাতির পতঙ্গের মধ্যে ২৫টি বিপণ্ণ হয়ে যাবে আগামী শতাব্দীর শুরুতেই। এর পিছনে অন্যতম কারণ স্থানীয় জলবায়ুর নাটকীয় পরিবর্তন।
পৃথিবীর সেরা জীব মানুষ। কিন্তু মানব সভ্যতাও বিপণ্ণ হবে না-মানুষদের বিপণ্ণতায়। আসলে ফল, সবজি, ফুলের ফলনে পতঙ্গের প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই তারা অবলুপ্ত হলেই মানুষের জীবনধারণও ক্রমেই সমস্যার মুখে পড়বে। কার্যতই বিপণ্ণ হবে মানব সভ্যতার অস্তিত্বও। পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীরা অবশ্য বহুদিন ধরেই বলছেন, জলবায়ু সংকট ঠেকাতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্ত সাবধান বার্তা সত্ত্বেও ছবিটা বদলায়নি। এই পরিস্থিতিতে ফের নতুন করে আশঙ্কার কথা শোনালেন গবেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.