সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আয়লা, আমফান (Amphan), যশ (Yash) – পরপর একাধিক ঘূর্ণিঝড়ে অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বাংলার ম্যানগ্রোভ অরণ্য (Mangrove Forest)। তাকে আবার স্ব-রূপে ফেরাতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ম্যানগ্রোভ অরণ্য এলাকাঘেরা প্রতি জেলায় ৫ কোটি করে চারা রোপনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। মোট ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা বসানো হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে। সরকারি স্তরে সেসব কাজও শুরু হয়েছে। তবে তার আগে ম্যানগ্রোভ দিবসে স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা নতুন করে উদ্যোগ নিলেন, যা বেশ প্রশংসনীয়। কুলতলির কৈখালির ৪ নং ব্লকে তাঁরা তৈরি করলেন ম্যানগ্রোভ নার্সারি (Nurdery)। সুন্দরী, গরান, কাঁকড়া চারা রোপন করে সেই কাজে হাত লাগালেন তাঁরা। এখান থেকে এবার স্থানীয় বাসিন্দাদের চারা বিলি করা হবে। যাতে প্রত্যেকের নিজেদের বাড়িতেও ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ থাকে।
সুন্দরী, গরান, গেঁওয়া, হেঁতাল – চেনা এই কয়েকটি উদ্ভিদের বাইরে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বাসিন্দা যে আরও কত জন, তা সুন্দরবন (Sunderbans) দেখলে বোঝার উপায় নেই। তবে সুন্দরবনবাসী কিন্তু এদের প্রতিটি খুব ভালভাবে চেনেন। এসব দেখেই তো ছোট থেকে বড় হওয়া। কিন্তু পরপর কয়েকটা ঘূর্ণিঝড় সব নষ্ট করে দিয়েছে। বাঁধের ধারে আর সেই শ্বাসমূলওয়ালা গাছের ভিড় নেই। শক্তিশালী আমফান উপড়ে ফেলেছে তাদের। আবার নতুন করে রোপনের পালা। শুধু প্রশাসনিক স্তরেই নয়, এই কাজে বাসিন্দারাও যাতে সমানভাবে উদ্যোগী হন, সেই লক্ষ্যেই পরিবেশপ্রেমীরা ম্যানগ্রোভ দিবসে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
কুলতলির কৈখালির ৪ নং ব্লক। এখানেই ম্যানগ্রোভের নার্সারি তৈরির কাজ শুরু করলেন পরিবেশপ্রেমী সুজয় বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ”আগে এখানকার নদীবাঁধগুলো ধারে ম্যানগ্রোভ ভরে থাকত। কিন্তু এখন তা নেই। আমরা এই গরান, কাঁকড়া গাছের চারা রোপন করছি এখানে। আরও নানা ম্যানগ্রোভের চারা নিয়ে একটা নার্সারি তৈরি হচ্ছে। এখান থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের পরে চারা বিলি করা হবে। যাতে তাঁরা নিজেরাই এসব গাছ লালনপালন করতে পারেন। একসময় প্রকৃতিরই অংশ ছিল এসব। আর এখন আমরা প্রকৃতিকে এসব ফিরিয়ে দিচ্ছি।” সুজয়বাবুদের এই উদ্যোগে এদিন শামিল হয়েছিল কচিকাঁচারাও। তাদের বোঝানো হয় ম্যানগ্রোভের উপকারিতা। যত্ন নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। এমনই অভিনব উদ্যোগ নিয়ে ম্যানগ্রোভ দিবস কার্যত সার্থক করে তুললেন সুজয়বাবুরা।
ছবি ও ভিডিও: পিন্টু প্রধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.