সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাটল ভুল ধারণা। ইতিপূর্বে বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেছিলেন যে ‘ট্রান্সপোসন’ নামে পরিচিত ডিএনএ উপাদানগুলির বেশিরভাগই ক্ষতিকারক। এগুলি মাঝে মাঝেই জিনোম বিপর্যয় ডেকে আনে এবং হিমোফিলিয়া থেকে শুরু করে স্নায়বিক ব্যাধি এমনকী ক্যানসার পর্যন্ত বিভিন্ন রোগ ডেকে আনতে পারে। এই উপাদানগুলিকে তাই ‘স্বার্থপর ডিএনএ’-ও বলা হয়। তবে এবার সিনাই হেলথের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, এই ট্রান্সপোসন আদপে মানব বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এই আবিষ্কারটি মানব বিকাশ ছাড়াও মানুষের নানাবিধ রোগের সঙ্গে ডিএনএ-র জড়িত থাকার বিষয়ে নতুনভাবে আলোকপাত করতে সক্ষম।
সিনাই হেলথের একটি অংশ, লুনেনফেল্ড-ট্যানেনবাউম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ইনভেস্টিগেটর এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের আণবিক জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মিগুয়েল রামালহো-সান্তোস জানিয়েছেন, ‘মানুষ ট্রান্সপোসনকে ভাইরাসের মতো মনে করে, যেখানে তারা নিজেদের বংশবিস্তারের একমাত্র উদ্দেশ্যে আমাদের কোষকে হাইজ্যাক করে। কিন্তু এখানে আমরা আবিষ্কার করেছি যে, এই উপাদানগুলি নিছক জিনোমিক পরজীবী নয় বরং প্রাথমিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য।’
গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ডেভলপমেন্টাল সেল জার্নালে। এই নির্দিষ্ট গবেষণাটির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা লাইন-১ নামে পরিচিত ট্রান্সপোজেবল উপাদানগুলির দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। মানব জিনগুলির বিপরীতে, লাইন-১ উপাদানগুলি আমাদের কোষের জেনেটিক উপাদানগুলির প্রায় ২০ শতাংশ গঠন করে। কিছু লাইন-১ উপাদান জিনোমকে প্রশস্ত করতে এবং নতুন স্থানে নিজেকে সন্নিবেশ করাতেও পারে।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ড. জুয়ান ঝাং-এর বক্তব্য, ‘আমরা আমাদের গবেষণার ফলাফলে দেখিয়েছি যে, লাইন-১ উপাদানগুলি জিনের প্রকাশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে নিয়ন্ত্রণ করে, যেখানে ভ্রূণ বিভিন্ন কাজের জন্য তার কোষগুলিকে বিশেষায়িত করতে শুরু করে। আমাদের করা গবেষণার ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে, এটি কোনও দুর্ঘটনাজনিত ঘটনা নয় বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া। পরবর্তীতে এই তথ্য জিনের বিকাশ নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার পথ খুলে দেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.