সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনন্ত মহাকাশের বুক চিরে পৃথিবী লক্ষ্য করে ধেয়ে আসছে দৈত্যাকার এক গ্রহাণু। ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্যের বিশাল ইমারতের সমান এই প্রস্তরখণ্ড পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে ঘটতে পাড়ে মহাপ্রলয়। দানবাকার এই গ্রহাণুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এবার সতর্কবার্তা দিল নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (JPL)। জানা যাচ্ছে, ৩৩,৯৪৭ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসা এই গ্রহাণু আজই কান ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে পৃথিবীর।
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা এইব গ্রহাণুটিকে ২০২০ ডব্লু জি অ্যাপোলো গ্রুপের মধ্যে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত পৃথিবী থেকে গ্রহাণুর দূরত্ব ও তার আয়তন হিসেব করে ‘সম্ভাব্য বিপজ্জনক’ গ্রহাণুগুলিকে শ্রেণিবদ্ধ করেন বিজ্ঞানীরা। মূলত ৪৬০ ফুটের চেয়ে বড় ও পৃথিবী থেকে ৭.৫ মিলিয়ন কিলোমিটারের মধ্য দিয়ে যাওয়া গ্রহাণুগুলিকে সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্রহাণু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেই অঙ্কে এই গ্রহাণুকে পৃথিবীর জন্য ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার দাবি, ২০২০ ডব্লু জি নামের এই গ্রহাণুটি ৩.৩৩ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বে পৃথিবী অতিক্রম করবে। ফলে তুলনামূলক কাছ থেকে অতিক্রম করা এই বিশাল মহাজাগতিক পিণ্ডের উপর কড়া নজর রেখেছেন দেশের বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, এই ধরনের আগন্তুক গ্রহাণু অতীতে বহুবার পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে এবং পৃথিবীর বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রাগৈতিহাসিক কালে পৃথিবীর বুকে রাজত্ব করা ডাইনোসরদের অবলুপ্তির পিছনেও এই ধরনের মহাজাগতিক বস্তুর আছড়ে পড়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক অতীতে বহুবারই গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষে মানব সভ্যতা ধ্বংস হওয়ার নানা জল্পনা ও গুজব শোনা গিয়েছে।
তবে সাধারণত এই ধরনের গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমই থাকে। যদিও কখনও কখনও অন্য গ্রহের সঙ্গে মহাকর্ষীয় টানের কারণে তারা আচমকাই অনেকটা কাছে চলে আসে। তাই নিয়মিতই এই ধরনের গ্রহাণুর গতিবিধির নিরীক্ষণ করে নাসা। জুলাই মাসেই পৃথিবীর কাছ ঘেঁষে চলে গিয়েছে অন্তত ১০টি গ্রহাণু। এরই পাশাপাশি গ্রহাণুর পাথুরে শরীর থেকে উপাদান সংগ্রহের চেষ্টাও করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। নাসার পরিকল্পনা রয়েছে পৃথিবীর কাছাকাছি এসে পড়া কোনও গ্রহাণুকে ধাক্কা মেরে সেটির গতি কমিয়ে দেওয়ার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.