সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় এক কোটি বছর আগের কথা। সেসময় পৃথিবী দাপিয়ে বেরিয়েছিল ভয়ংকর দর্শন সরীসৃপের দল। যাদের ‘নাগা লিজার্ড’ (Naga Lizards) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে পরবর্তী সময়ে। সেই অদ্ভুত দর্শন ‘টিকটিকি’রা আসলে কে? জীবাশ্ম আবিষ্কারের পর তাদের যে পরিচয় দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, বছর খানেকের মধ্যেই তা ভুল বলে প্রমাণিত হল। জানা গেল, ‘নাগা লিজার্ড’রা ডাইনোসর (Dinosaur) গোত্রের কেউ নয়। বরং তারা সরীসৃপ গোষ্ঠীর। আরও সহজ করে বললে, লুপ্ত হয়ে যাওয়া টিকটিকিরই পূর্বপুরুষ এই সব বৃহৎ সরীসৃপরা। সম্প্রতি ‘কারেন্ট বায়োলজি’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। যা নিয়ে আপাতত তোলপাড় বিজ্ঞানী মহলে।
২০২০ সালের মার্চ। মায়ানমার (Myanmar) থেকে উদ্ধার হয় বিশালাকার সরীসৃপদের কঙ্কাল, জীবাশ্ম। তা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, ফসিলগুলি (Fossil) ডাইনোসরের প্রজাতির। সবচেয়ে ছোট চেহারা ডাইনোসর ছিল তারা। পক্ষীকূলে যেমন হামিং বার্ড সবচেয়ে ছোট, এইসব সরীসৃপকে তার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বিখ্যাত ‘নেচার’ (Narture) পত্রিকায়। তবে বছরখানেকের মধ্যে সেই ভুল ভাঙল। ব্রিস্টলের স্কুল অফ আর্থ অ্যান্ড সায়েন্সের তরফে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। তাতেই ভুল প্রমাণিত হয়েছে বলে নতুন দাবি বিজ্ঞানীদের একাংশের।
সম্প্রতি ‘কারেন্ট বায়োলজি’ পত্রিকায় এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মায়ানমারে উদ্ধার ওই সরীসৃপ অর্থাৎ নাগা লিজার্ডদের চিহ্নিত করা হয়েছে Oculudentavis Naga নামে। এদের চোখ, কঙ্কাল, সফট টিস্যু উচ্চপ্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীদের দাবি, এদের হাড়গোড়ের সঙ্গে সরীসৃপদের মিলই অধিকাংশ। এমনকী চরিত্রও মিলে যায় বুকে ভর দিয়ে হাঁটা প্রাণীদের সঙ্গে। কাজেই এরা কোনওভাবেই ডাইনোসর প্রজাতির নয়। আকারে বড় হলেও টিকটিকি বা এই গোত্রীয় প্রাণীর সঙ্গে একসারিতেই রাখা যায় তাদের। প্রায় ৯ কোটি বছর আগের প্রাণীদের ফসিল উদ্ধার করে তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করার কৃতিত্ব তো বড় বটেই। তবে ফসিল চিনতে ভুলের পর তা ফের সংশোধন করা নিঃসন্দেহে আরও প্রশংসনীয় কাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.